ভারতে জ্বালানি তেল পাঠানোর জন্য রাশিয়ার ১৮৩ ট্যাঙ্কারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে রাশিয়া ভিত্তিক সামুদ্রিক বীমা প্রদানকারী সংস্থাগুলোও। চলতি বছরের ১২ মার্চ থেকে নিয়ম বদলে যাওয়ার কারণে রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারতকে অনেক বেশি দামে তেল আমদানি করতে হতে পারে মস্কো থেকে। ফলে ভারতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার আসন্ন ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে দৌত্য শুরু করেছে ভারত। সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটনে উপস্থিত থাকবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি অন্য দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি ভারতের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এই বিষয়টি নিয়েও কথা বলবেন ট্রাম্প সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
শনিবার সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, সাউথ ব্লক ইতোমধ্যেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। তার কথায়, “রাশিয়ার জ্বালানি ক্ষেত্রে এই বাড়তি নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক সংস্থা এবং ব্যক্তি জড়িত হয়ে পড়ছে। আমরা আমেরিকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। ভারতের সংস্থাগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তা তাদের বোঝানো হচ্ছে।”
পাশাপাশি মুখপাত্র এ কথাও বলেন, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি কমানোর কোনও পরিকল্পনা ভারতের নেই। তার কথায়, “আমরা সব সময়েই দেশের জ্বালানির প্রয়োজনীয়তার সাপেক্ষে তেল আমদানি করি। তার সঙ্গে বাজারের পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিও গুরুত্ব পায়।”
পাশাপাশি তিনটি ভারতীয় পারমাণবিক সংস্থার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়ার মার্কিন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভাবাঅ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার (বিএআরসি),ইন্দিরা গান্ধী পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র (আইজিসিএআর) ও ইন্ডিয়ান রেয়ারআর্থস (আইআরই)-এর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে রণধীর বলেন, “আমেরিকার এই সিদ্ধান্তে বেসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করবে।”
দেশীয় তেল উৎপাদন ও বিপণনকারী সংস্থাগুলো এখন এশিয়া ও ইউরোপের অপরিশোধিত তেল ব্যবসায়ীদের কাছে বিকল্প খুঁজছে। আমেরিকার রাজস্ব বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রুশ তেলের উপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত একটি ‘ট্রানজিশন’ পর্ব রাখা হয়েছে নিষেধাজ্ঞার নতুন পর্ব চালু হওয়ার জন্য। ১২ মার্চের পরে বিশ্বজুড়ে যে পরিবর্তন আসবে, তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য ভারতের সরকারি ও বেসরকারি তেল বিপণনকারী সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে বিকল্পও খুঁজছে। সূত্র:আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/একেএ