থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার বিতর্কিত সীমান্ত এলাকাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ডের দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং দুইজন সেনা সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এিই মধ্যে কম্বোডিয়ায় বিমান হামলার দাবি করেছে থাইল্যান্ড। ফলে সংঘর্ষ আরও বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নেয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
থাই সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার সেনারা তাদের আগেই উসকানি দিয়েছে। উত্তর-পশ্চিম কম্বোডিয়ার ওদ্দার মিনচেই প্রদেশে অবস্থিত বিতর্কিত 'তা মোয়ান থম মন্দির' সংলগ্ন এলাকায় কম্বোডীয় বাহিনী প্রথমে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এরপরই শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই, যা থামার কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।
থাইল্যান্ডের দাবি, সংঘর্ষ শুরুর আগে কম্বোডিয়া ওই এলাকায় একটি নজরদারি ড্রোন পাঠায়। পরে আর্টিলারি ও দীর্ঘপাল্লার বিএম-২১ রকেট লাঞ্চার ব্যবহার করে থাই ঘাঁটির দিকে গোলাবর্ষণ করে। এই হামলার জবাবে থাই বাহিনীও পাল্টা প্রতিক্রিয়া শুরু করে এবং সংঘর্ষ দ্রুত ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
সংঘর্ষ শুরুর পর থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দ্বিতীয় আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, তারা একাধিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। এসব যুদ্ধবিমান ইতিমধ্যে হামলা চালিয়ে কম্বোডিয়ার দুটি আঞ্চলিক সামরিক সহায়তা ইউনিট ধ্বংস করার দাবি করেছে। যদিও এই দাবি কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রিচা সুকসুওয়ানন্ট জানিয়েছেন, বিমান হামলাগুলো কেবল সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর চালানো হয়েছে এবং কোনো বেসামরিক স্থাপনায় হামলা হয়নি। তবে কম্বোডিয়ার সরকার এখনো থাইল্যান্ডের এই বিমান হামলার বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার করেনি।
বহুদিন ধরেই থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্তবর্তী কয়েকটি মন্দির এলাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে ‘তা মোয়ান থম’ এবং ‘প্রিহ ভিহার’ মন্দির ঘিরে অতীতে একাধিকবার সশস্ত্র সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে এই অঞ্চল ঘিরে কয়েক দফায় সংঘর্ষে উভয় দেশের বহু সেনা ও বেসামরিক মানুষ নিহত হন।
সূত্র : সিএনএন ও আল-জাজিরা।
বিডি-প্রতিদিন/শআ