ভয়াবহতম খরার কবলে পড়া ইরানের বাসিন্দারা এবার আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। দেশটির সরকার কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঘটাতে কাজ শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে মেঘের মধ্যে রাসায়নিক ছড়ানোর প্রযুক্তি ক্লাউড সিডিং ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। পাশাপাশি, দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা মিলেছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ইরনা জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো উরমিয়া লেক উপত্যকায় একটি ক্লাউড সিডিং ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এ হ্রদ দীর্ঘদিনের খরায় শুকিয়ে বিশাল লবণাক্ত সমতলে পরিণত হয়েছে। পূর্ব আজারবাইজান ও পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশেও একই ধরনের কার্যক্রম চালানো হবে।
ইরনা আরও জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলের ইলাম, কেরমানশাহ, কুর্দিস্তান ও লোরেস্তানসহ উত্তর-পশ্চিমের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশে সম্প্রতি বৃষ্টি হয়েছে। তবে আবহাওয়া সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি গড়ের তুলনায় এ বৃষ্টিপাত প্রায় ৮৯ শতাংশ কম।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও তেহরানের আলবোরজ পর্বতশ্রেণির তোচাল পাহাড় ও স্কি রিসোর্টেও চলতি বছর প্রথমবারের মতো তুষারপাত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে।
ক্লাউড সিডিং প্রক্রিয়ায় সাধারণত বিমান থেকে সিলভার আয়োডাইড বা লবণের মতো কণিকা মেঘের ভেতরে ছড়িয়ে বৃষ্টিপাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। গত বছর ইরান দাবি করেছিল, তারা নিজেরাই এই প্রযুক্তি উন্নয়ন করেছে।
শুষ্ক জলবায়ুর দেশ ইরান বহুবছর ধরেই খরা ও তাপপ্রবাহে ভুগছে। যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তেহরান শহরে বৃষ্টিপাত শত বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। দেশের অর্ধেক প্রদেশে কয়েক মাস ধরে এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি। বেশ কয়েকটি প্রদেশের জলাধারগুলোতেও পানি কমেছে রেকর্ড পরিমাণে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেছিলেন, শীতের আগে বৃষ্টি না হলে তেহরানের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের এ অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতও এমন কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য ক্লাউড সিডিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছে।