মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চাইলেই ব্রেক্সিট বাতিল করতে পারবে যুক্তরাজ্য

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ আদালতের রায়

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাকি ২৭ সদস্যের অনুমতি ছাড়াই একতরফাভাবে ব্রেক্সিট বাতিল করতে পারবে যুক্তরাজ্য। গতকাল দ্য ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের (ইসিজে) এক রুলে এ কথা বলা হয়েছে। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র প্রস্তাবে ভোটাভুটির ঠিক এক দিন আগে এ সিদ্ধান্ত জানানো হলো। যদিও সেই ভোটের দিন পিছিয়ে দিয়েছেন তেরেসা মে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ আদালত লুক্সেমবার্গ কোর্ট বলেছে, লিসবন চুক্তির যে ৫০ অনুচ্ছেদ সক্রিয় করে ব্রেক্সিটের পথে এগুচ্ছে ব্রিটেন তা তারা একতরফাভাবে রদ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেই থেকে যেতে পারে। এমন আইনগত ক্ষমতা ব্রিটেনের হাতে আছে। গত সপ্তাহে অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতকে যে আইনি পরামর্শ দিয়েছিলেন তার সঙ্গে আদালতের ওই রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ। অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেছিলেন, একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে ব্রিটেন এই শেষ মুহূর্তে এসেও তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারে। ব্রিটিশদের মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে রয়েছে প্রবল ভিন্নমত। জরিপে ব্রেক্সিট গণভোট-পরবর্তী সময় দেশটির জনগণের মনোভাব পাল্টে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে তেমনি ব্রেক্সিটবিরোধীদের অনেকে দাবি তুলেছেন আরেকটি গণভোটের। ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়ে মতবিরোধের জেরে পদত্যাগ করেছেন দুই-দুইজন ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী। অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দাঁড়িয়েছেন। পাশাপাশি, তেরেসা মেকে ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সংসদীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিতে আস্থা ভোটের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন দলটির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। ৪৮ জন দাবি করলেই ডাকা হবে আস্থা ভোট। বেক্সিটবিরোধী রাজনীতিবিদদের একাংশ যুক্তি দেখিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের উচিত একতরফাভাবে ব্রেক্সিট স্থগিত করা, তবে তাদের বিরোধিতা করেছে ব্রিটিশ সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে সোমবার ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের রুলে বলা হয়েছে, একতরফাভাবেই যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট বাতিল করতে পারবে। এদিকে তেরেসা মে সোমবার ভোট পেছানোর ঘোষণা দিয়ে পার্লামেন্টে বলেন, ‘আমরা আগামীকাল (মঙ্গলবার) ভোটাভুটি করলে চুক্তিটি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হতে পারে। আর তাই এ সময়ে হাউসে বিভক্তির পথে পা না বাড়িয়ে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ তবে মে তার চুক্তিটি যে সঠিক সে কথাও জোর দিয়েই বলেছেন। ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে কমন্সে ভোট কখন হবে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী মে কিছু বলেননি। তবে তিনি বলেন, ২১ জানুয়ারির আগেই ভোট হতে হবে। ইউরোপীয় কোর্টের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানানোর পরও কোনো সদস্য রাষ্ট্র তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে। সদস্যপদ প্রত্যাহারজনিত চুক্তিতে পৌঁছানোর আগে কিংবা সদস্যপদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দুই বছর পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলের সময় পাবে তারা। যদি দুই বছরের ওই সময়সীমা বাড়ানো হয়, তবে বর্ধিত সময় পর্যন্ত সদস্য রাষ্ট্রটি সিদ্ধান্ত বদলের সুযোগ পাবে। তবে আদালত জানিয়ে দিয়েছে সিদ্ধান্ত বদলের ক্ষেত্রে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ’ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত বাতিলে পার্লামেন্টের অনুমোদন লাগবে। বিবিসি

সর্বশেষ খবর