যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মাদুরোর সঙ্গে আমাদের কিছু আলোচনা হতে পারে আর তার ফল কী হয় আমরা দেখব। তারা কথা বলতে চায়।’
ফ্লোরিডা থেকে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরতে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ আকাশযানে ওঠার আগে তিনি এসব কথা বলেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, মাদুরোর সঙ্গে কথা বলার সম্ভাবনা নিয়ে আর বিস্তারিত কিছু জানাননি ট্রাম্প। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অবৈধ মাদক কারবারের সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের, যা মাদুরো প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। ভেনেজুয়েলার উপকূলসংলগ্ন ক্যারিবীয় সাগর ও পুয়ের্তো রিকো দ্বীপে ব্যাপক সামরিক সমাবেশ গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র আর ওই অঞ্চলে সন্দেহমূলক মাদকবাহী নৌযানগুলোতে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে। এ নিয়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে আছেন মাদুরো। রয়টার্স লিখেছে, ট্রাম্পের ওই মন্তব্য এ উত্তেজনা কমানোর পথে প্রথম ইঙ্গিতগুলোর একটি। ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিকল্পগুলো নিয়ে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে তিনটি বৈঠক করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে অন্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব বিকল্পের মধ্যে ভেনেজুয়েলার ভিতরে স্থল হামলা চালানোর বিষয়টিও ছিল। -রয়টার্স
শুক্রবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভেনেজুয়েলার বিষয়ে তিনি ‘মোটামুটি মনস্থির করে ফেলেছেন’। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি সিদ্ধান্ত আসবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। রবিবার ট্রাম্প যা বলেছেন সে বিষয়ে তাদের মন্তব্য জানানোর জন্য ভেনেজুয়েলার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছিল রয়টার্স, কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। একই দিন এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্টেল দে লোস সোলেস নামে কথিত মাদক সংগঠনকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকভুক্ত করছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকদ্রব্য পাঠাতে অপরাধী সংগঠন ট্রেন দে আরাগুয়ার সঙ্গে কাজ করে কার্টেল দে লোস সোলেস। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো কার্টেল দে লোস সোলেসকে নেতৃত্ব দেন। কিন্তু মাদুরো এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। রুবিওর ঘোষণার মানে যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর সম্পদ ও ঘরবাড়িতে আঘাত হানতে পারে কি না-এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি আমাদের তা করার বৈধতা দেয়, কিন্তু আমরা বলিনি যে আমরা তা করতে যাচ্ছি।’ রুবিও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার ওই চক্রটিকে ২৪ নভেম্বর থেকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন (এফটিও) হিসেবে বিবেচনা করার পরিকল্পনা করছে। এর অর্থ সেদিন থেকে মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কার্যত সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচিত হবেন। ‘মাদুরো কথা বলতে আগ্রহী’, এ বক্তব্যে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন-এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যে-কারও সঙ্গে কথা বলি।’ অক্টোবরের প্রথম দিকে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন। ফলে সরাসরি কূটনৈতিক চ্যানেলে মাদুরোর সঙ্গে যোগাযোগ করার উপায় নেই ওয়াশিংটনের।