মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা মোকাবিলা নাকি জলবায়ু রক্ষা

দ্বিধাবিভক্ত বিশ্ব

করোনা মোকাবিলা নাকি জলবায়ু রক্ষা

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের উপনির্বাহী পরিচালক ওবাইস সরমাদ বলেছেন, ‘যদিও কভিড-১৯ আজ আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন দীর্ঘ মেয়াদে মানবতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’ বিশ্ব মহামারীর মুখোমুখি হওয়ায় সরমাদ বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন অদৃশ্য হয়নি বরং তার প্রভাব ত্বরান্বিত করছে। সাইবেরিয়ায় একটি হিটওয়্যার এ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নিয়েছিল, যা বছরের এই সময়ের জন্য গড়ের চেয়ে ১৮ ডিগ্রি বেশি। আটলান্টিক মহাসাগরে হারিকেনের তা-ব শুরু হয়েছে, আগস্টের আগেই সর্বাধিক গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় রেকর্ড করা হয়েছে। বন্যা বাড়ছে বিশ্বব্যাপী, আবার আমেরিকার একটি অংশ দাবানলে জ্বলছে। ফলে এখন করোনা বিপর্যয় মোকাবিলার মতোই কি গুরুত্ব দিয়ে আবহাওয়া বদল রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত? কিন্তু এ প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত গোটা বিশ্ব। সম্প্রতি এক বিশ্বসমীক্ষায় উঠে এলো এমনই তথ্য। জলবায়ু পরিবর্তনকে কে কতটা গুরুত্ব দিতে চায়, তা বোঝা গেল স্পষ্টভাবে। তবে একটা বিষয়ে সবাই একমত, বিশ্ব উষ্ণায়ন বা আবহাওয়া পরিবর্তনের বিপদ নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

সম্প্রতি ‘গ্লোবস্কান’ নামে একটি সংস্থা এ নিয়ে জনসমীক্ষা চালিয়েছিল বিশ্বজুড়ে। প্রশাসনিক স্তর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত চালানো হয় এ সমীক্ষা। তাতে দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলো করোনার মতোই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের মোকাবিলা করার পক্ষে। অথচ তুলনায় ধনী দেশগুলো এর বিপদের কথা স্বীকার করে নিলেও পদক্ষেপ গ্রহণে কিছুটা নীরব। উদাহরণস্বরূপ, সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ভারত, কেনিয়া, নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলো চায় পরিবেশ বাঁচাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হোক। ফ্রান্স ও আমেরিকার মানুষজনেরও একই মত।

তবে জাপান, সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এ নিয়ে নীরব। আবহাওয়া পরিবর্তন বিষয়ে দ্রুত গুরুত্বের সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া নিয়ে সেসব দেশে ভোট পড়েছে ৪৫ শতাংশের কম। এ থেকেই অনুমান, তুলনায় ধনী দেশগুলো জলবায়ু বদলের গুরুত্ব ততটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ অথবা বুঝতে পারলেও তা মোকাবিলায় এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করছে না। মোট ২৭টি দেশের ওপর সমীক্ষা চালিয়েছে ‘গ্লোবস্কান’। রিপোর্ট বলছে, তাতে ৯০ শতাংশ মানুষই জলবায়ু পরিবর্তনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০১৪ সালেও এ ধরনের একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল সংস্থাটি। তাতে আমেরিকার ৬০ শতাংশ মানুষ এ বিষয়ে চিন্তিত ছিল। এবারের সমীক্ষার ফল বলছে, এখন ৮১ শতাংশ মার্কিনিই ব্যাপারটাকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছে।

সর্বশেষ খবর