বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে জি-৭ নেতাদের পরিকল্পনা

৩১ আগস্টের সময়সীমা বাড়ানো ছিল আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

তালেবানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে শিল্পোন্নত সাতটি দেশের জোট জি-৭ নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছেন। গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে গনি সরকারের পতনের পর তালেবানের পুনরুত্থানে এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে বিশ্ব রাজনীতির বড় কৌশল হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের জন্য ৩১ আগস্টের সময়সীমা বাড়ানো গতকালের আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না তা নিয়েও আলোচনা হয়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, যিনি বর্তমান জি-৭ এর সভাপতি হিসেবে বৈঠকের আয়োজন করছেন, পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মতে, তালেবানদের সঙ্গে একীভূত পদ্ধতির পক্ষে কথা বলছেন। তিনি চান বিশ্বের নেতৃস্থানীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলো সরকারকে কীভাবে স্বীকৃতি দেবে বা সম্ভাব্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে বা সাহায্য বন্ধ করবে সে বিষয়ে একটি পরিকল্পনা নিয়ে আসুক।

এখন পর্যন্ত কোনো সরকারই তালেবানকে আফগানিস্তানের সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এটি করলে দেশটি পূর্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বৈদেশিক সহায়তার সুযোগ পাবে। চীন ও রাশিয়ার মতো নন-জিভুক্ত শক্তিও তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

যদিও মানবাধিকার লঙ্ঘন, নৃশংসতার অভিযোগে তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ বিশ্বের অনেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত দেশটিতে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বিশ্লেষকরা বলেছেন, জি-৭ এর স্বীকৃতি পেলে আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তার দুয়ার খুলতে শুরু করবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, জাপান- শিল্পোন্নত সাতটি দেশের নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠকে তালেবান সরকারের স্বীকৃতির জন্য করণীয় নির্ধারণ করছেন। জি-৭ জোট নেতারা বলছেন, আন্তর্জাতিক ইস্যুতে নমনীয়তার পাশাপাশি নারী অধিকারকে স্বীকৃতি দিলে তবেই তারা তালেবানকে স্বীকৃতি দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স রয়টার্সকে বলেন, ‘তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে ও চলমান সংকট নিরসনে একযোগে কাজ করতে বৈঠক করছেন জি-৭ নেতারা। পাশাপাশি দেশটিতে বৈদেশিক সাহায্য কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকটিও বিবেচনা করা হবে।’

তালেবানের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলছে আমেরিকা : গোটা বিশ্বের এখন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু আফগানিস্তান।  রাজধানী কাবুল দখল হয়েছে দিন দশেক হলো। এই পরিস্থিতিতে দুই দিন আগে মুখ খুলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এবার তালেবান প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখলেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বললেন, তালেবানদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আলোচনা চালাচ্ছে আমেরিকা। তাদের এখন মূল উদ্দেশ্যই  হলো মার্কিনিদের আফগানিস্তান থেকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। সুলিভান বলেন, ‘রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা স্তরে আমরা প্রতিনিয়ত তালেবানদের সঙ্গে কথা বলছি। কী ব্যাপারে কথা হয়েছে, সে কথা হয়তো এখানে জানাতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি, একাধিক বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে।’

এদিকে সোমবার তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিন স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ৩১ আগস্টের মধ্যে আমেরিকান সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে। যদি সেটা না হয়, তার অর্থ আফগানিস্তানে বাড়তি মার্কিন সেনা রয়েছে। যা থাকার কথা নয়। মনে রাখবেন, ডেডলাইন নয়, ওটা রেডলাইন।’ যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন এই ডেডলাইন বাড়ানো হবে কি না ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই (গতকাল) সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা।

সর্বশেষ খবর