শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে কাঁপল ইউক্রেন

ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে কাঁপল ইউক্রেন

বাড়ি-গাড়ি যা ছিল সব এখন ধ্বংসস্তূপ। গতকাল রাশিয়ার শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের অনেক শহরে এ অবস্থা বিরাজ করছে -এএফপি

ইউক্রেনে ঝাঁকে ঝাঁকে মিসাইল হামলা চালাল রাশিয়া। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, দেশটির জনবহুল ও বেসামরিক অবকাঠামোতে ১২০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। আর রাজধানী কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো বলেছেন, বিস্ফোরণে আহত তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ বছরের এক কিশোরী আছে। খারকিভ, ওডেসা, লাভিভ ও ঝিয়াতোম শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গতকাল সকাল থেকে ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে জাইটোমির এবং ওডেসাতেও। এখনো পর্যন্ত কতটা ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি ইউক্রেন। সদিচ্ছার অভাবে দুই পক্ষই এখনো পর্যন্ত যুদ্ধ থামাতে বড় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। চারটি অঞ্চলের সংযুক্তি ইউক্রেন মেনে নেবে বলেই মনে করছে ক্রেমলিন। এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ১০ দফা শান্তি প্রস্তাবের কথা জানান। কিন্তু ক্রেমলিন এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপরই ইউক্রেনজুড়ে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলো। ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়া বারবার অসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে। কিন্তু সে কথা তারা অস্বীকার করেছে। ইউক্রেন বলেছে, প্রতিদিনের বোমা হামলা একের পর এক শহর-পরিকাঠামো ধ্বংস করছে। বুধবার রাশিয়ার গোলাগুলি খেরসনের একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে আঘাত হানে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বুধবার বলেছেন, রাশিয়া খেরসন, জাপোরিঝঝিয়াকে ঘিরে ২৫টিরও বেশি বসতিতে গোলাবর্ষণ করেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ ওডেসার আঞ্চলিক নেতা ম্যাকসিম মারশেঙ্কো বলেছেন, ইউক্রেনের ওপর বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, সমুদ্র ও আকাশ পথে বিভিন্ন দিক থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র এসেছে। রাশিয়া তাদের হামলায় বিপুলসংখ্যক কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করেছে বলেও জানিয়েছে তারা। মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকোও রাজধানীতে একাধিক বিস্ফোরণের খবর দিয়েছেন।

 সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনের স্থাপনাগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র মেরে দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনা প্রায় ধসিয়ে দিয়েছে। গতকাল লাভিভের মেয়র বলেছেন, তার শহরের ৯০ শতাংশই বিদ্যুৎহীন। রাজধানীতে নতুন করে লোডশেডিং ও পানির সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ক্লিৎসকোও। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনও ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনায় তার বাহিনী হামলা চালাচ্ছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ অনেকেই সংবেদনশীল স্থাপনায় রুশ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে বলে ম্যাক্রোঁ মস্কোকে সতর্কও করেছেন।

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে মিত্রদের কাছে অতিরিক্ত আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম চেয়ে আসছিল। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি তাদের সেই আবদারে সাড়া দিয়ে কিয়েভবাহিনীকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহে রাজি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর