পাকিস্তানের পেশোয়ারে নামাজের সময় এক বিস্ফোরণের পর এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১৫৭ জন। স্থানীয় সময় বেলা দেড়টা অর্থাৎ জোহরের নামাজের সময় ওই বিস্ফোরণের সময় মসজিদটি মুসল্লিতে ঠাসা ছিল।
মসজিদটির একাংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক মুসল্লি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। পাকিস্তানের টালমাটাল অর্থনৈতিক সময়ের মধ্যেও মাথাচাড়া দিচ্ছে জঙ্গিরা। সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের কাছে সম সময়ই বড় সমস্যা। এর মধ্যে গতকাল পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে মসজিদে ওই হামলা হলো। পুলিশ লাইনে মসজিদটির অবস্থান। হামলাকারী তার আত্মঘাতী জ্যাকেটের বিস্ফোরণ ঘটায়। কে বা কারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। হামলার দায় এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। তবে পাকিস্তানি তালেবানকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
টার্গেট পুলিশ : পাকিস্তানের সরকারি একজন কর্মকর্তা বলেছেন হামলার টার্গেট ছিল সম্ভবত পুলিশ। কারণ নিহতদের সিংহভাগই ছিল ওই বাহিনীর সদস্য।
পেশোয়ার নগর পুলিশের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইজাজ খান স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, বিস্ফোরণের সময় ওই এলাকায় ৩০০ থেকে ৪০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল। পেশোয়ারের লেডি রেডিং হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিম বলেন, আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, ‘জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ গতকালই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সেনাবাহিনী প্রধান আসিম মুনির। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই হামলার পেছনের লোকদের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।’ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শরিফ বলেন, ‘সন্ত্রাসের এই হুমকি মোকাবিলায় জাতি ঐক্যবদ্ধ।’ রাজধানী ইসলামাবাদে পুলিশ উচ্চ-সতর্কাবস্থা জারি করেছে।
রাজধানীতে ঢোকার এবং বেরোনোর সব পথে নিরাপত্তা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) পাকিস্তানের এই এলাকায় অনেক প্রভাব রয়েছে এবং অতীতে এই সংগঠনটি এখানে হামলার হুমকিও দিয়েছিল। ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাফর খানের মতে, বিস্ফোরণের প্রভাবে মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে। এর আগে গত বছর পেশোয়ারের কোচা রিসালদার এলাকার একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় ৬৩ জন নিহত হয়েছিল।
