সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চীনের বেলুনটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করল যুক্তরাষ্ট্র

চীনের বেলুনটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করল যুক্তরাষ্ট্র

গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ভেসে বেড়ানো চীনের গুপ্তচর বেলুনকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে এই পদক্ষেপ নিয়েছে পেন্টাগন। বেলুনটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পড়েছে। বেলুনের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করতে দল পাঠিয়েছে পেন্টাগন। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, এই বেলুনটি ধ্বংস করার আগে তিনটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং আকাশপথও বন্ধ ছিল। এরপর মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমান আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে ওই গুপ্তচর বেলুনটিকে গুলি করে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনায় ‘তীব্র অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছে এবং বেসামরিক চালকবিহীন আকাশযানটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র শক্তি প্রয়োগ করার প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এর আগে একটি বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যাচাই-বাছাইয়ের পর চীনের পক্ষ থেকে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে যে, এটি একটি বেসামরিক বেলুন- দুর্ঘটনাক্রমে সেটি নির্ধারিত পথ থেকে সরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে গিয়েছে।’

এদিকে প্রতিরক্ষা দফতরের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, একটি এফ-২২ ফাইটার বিমান বহু উঁচুতে উড়তে থাকা বেলুনটিকে একটি এআইএম-৯এক্স সাইডউইন্ডার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আঘাত করে। এরপর সেটি যুক্তরাষ্ট্র সাউথ ক্যারোলিনা উপকূলের প্রায় নয় নটিক্যাল মাইল দূরে সাগরে পড়ে যায়। এখন সাগরে প্রায় ১১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করার চেষ্টা করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। এজন্য ভারী ক্রেন নিয়ে সেখানে নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার যখন প্রথম বেলুনটিকে শনাক্ত করে মার্কিন সামরিক বাহিনী, তখন থেকেই এটিকে গুলি করে ভূপাতিত করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সেটাকে ধ্বংস করার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘তারা সফলতার সঙ্গে এটাকে নামিয়েছে। যারা এই কাজটি করেছে, তাদের আমি অভিনন্দন জানাই।’

কিন্তু মার্কিন আকাশে বেলুনটি দেখা যাওয়ার পর এক প্রকার কূটনৈতিক সংকট শুরু হয়। এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে একে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ আখ্যা দিয়ে সপ্তাহ শেষে চীন সফরের পরিকল্পনা বাতিল ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

বেলুনটির মাধ্যমে গোয়েন্দাগিরি করার অভিযোগ নাকচ করে চীনের কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এটি সাধারণ একটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী বেলুন।

চীনা বেলুন এতদূর গেল কীভাবে : মন্টানার বিলিংস শহরের আকাশে দেখা যাওয়ার আগে এটি আলাস্কার অ্যালেউটিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং কানাডার মধ্য দিয়ে উড়ে এসেছে। এ ধরনের বেলুন সাধারণ হিলিয়াম গ্যাসে ভরা বেলুন হয়ে থাকে। এটি আকাশের অনেক উঁচুতে উড়তে সক্ষম হয়। বেলুনের নিচের অংশে একটি সৌরশক্তির প্যানেল থাকে, যা থেকে বেলুনটি পরিচালনার শক্তি জোগানো হয়। এর নিচেই ক্যামেরা, রাডার, সেন্সর এবং যোগাযোগের সরঞ্জামগুলো থাকে।

সর্বশেষ খবর