ইরাকের পূর্বাঞ্চলীয় ওয়াসিত প্রদেশের কুত শহরের একটি বহুতল মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ৬৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ আরও অনেকে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ খবর নিশ্চিত করেছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল এক বিবৃতিতে ইরাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- কুত শহরের একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লাগার পর দমকল বাহিনী ৪৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
ওয়াসিত প্রদেশের গভর্নর মোহাম্মদ আল-মায়াহি জানান, মার্কেটের পাশাপাশি ভবনের একটি রেস্তোরাঁয়ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার রাতে আগুন লাগার সময় পরিবার নিয়ে বহু মানুষ সেখানে খাবার খাচ্ছিলেন কিংবা কেনাকাটা করছিলেন। অনেকেই ভবনের ভিতরেই আটকা পড়েন। গভর্নর আল-মায়াহি বলেন, এটি এক মর্মান্তিক বিপর্যয়। আমাদের ওপর এক ভয়াবহ দুঃখ নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, দমকল বাহিনী বহু মানুষকে জীবিত উদ্ধার করেছে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। ঘটনার পর তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এদিকে গভর্নর জানান, ভবন এবং মার্কেটের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাদের অবহেলায় প্রাণহানির কারণ হয়েছে, তারা ছাড় পাবে না। এ দুর্ঘটনার পর কুত শহরে ব্যাপক শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলা : ইরাকের উত্তরের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কুর্দিস্তানে নরওয়ের তেল ও গ্যাস কোম্পানি ডিএনও পরিচালিত একটি তেল ক্ষেত্রে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলের তাওকে এলাকার ওই তেল ক্ষেত্রে হামলা হয়েছে বলে কুর্দিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা জানিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইরাকে বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা শুরু হয়। এরপর থেকে এ নিয়ে নরওয়েজীয় কোম্পানি ডিএনওর তেল ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারের মতো হামলার ঘটনা ঘটল। কুর্দিস্তানের জাখো অঞ্চলের তাওকে ও পেশখাবুর তেল ক্ষেত্র পরিচালনা করে ডিএনও। নরওয়েজীয় এ কোম্পানির দুটি তেল ক্ষেত্রই ইরাকের তুরস্ক সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অবস্থিত। বৃহস্পতিবারের হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে বিস্ফোরণের কারণে ওই তেল ক্ষেত্রে তেল উত্তোলন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুর্দিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা। এ হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএনও কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।-রয়টার্স
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবল চলতি সপ্তাহে একের পর ড্রোন হামলার কারণে ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে তেল উৎপাদন দৈনিক প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে দেড় লাখ ব্যারেল কমে গেছে। সেখানকার জ্বালানিবিষয়ক দুই কর্মকর্তা বলেছেন, ড্রোন হামলায় অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় কুর্দিস্তানের একাধিক তেল ক্ষেত্রের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে বুধবার উত্তর ইরাকের দোহুক অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন কোম্পানি হান্ট অয়েলের পরিচালিত আইন সিফনি তেল ক্ষেত্রেও ড্রোন হামলা হয়। হান্ট অয়েল বলেছে, হামলায় তাদের কোনো কর্মী হতাহত হননি। এ ছাড়া হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়নের জন্য কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।-রয়টার্স