ফাতেমা বিনতে আব্দুল্লাহ আল জুজদানিয়া (রহ.) ছিলেন দীর্ঘায়ু লাভকারী একজন মহীয়সী মুসলিম নারী এবং নারীশিক্ষার দীপ্ত ইতিহাস। যাকে মুসনিদাতুল ওয়াকত বা সেই যুগে সনদসহ হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নারী হিসেবে অভিহিত করা হয়। তিনি বর্তমান ইরানের ইস্পাহান শহরে জুজদান এলাকায় ৪২৫ হিজরিতে জন্ম গ্রহণ করেন। প্রায় ৯৯ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি।
ইলমের জগতে ফাতেমা আল জুজদানিয়ার মতো নারী ব্যক্তিত্ব তাঁর পরবর্তী দুই শতাব্দী পর্যন্ত আত্মপ্রকাশ করেননি। তিনি ইমাম তাবারানি (রহ.)-এর শাগরেদ, বিখ্যাত হাদিসবিশারদ শায়খ আবু বকর মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ ইস্পাহানি (রহ.) (যিনি ইবনে রিজাহ নামে সর্বাধিক পরিচিত) থেকে আল মুজামের সনদ বর্ণনার জন্য প্রসিদ্ধ এবং সর্বশেষ ব্যক্তি ছিলেন। ইবনে রিজাহ (রহ.) থেকে হাদিস শ্রবণকালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
বিখ্যাত এই নারী মুহাদ্দিসার সম্পর্কে ইমামরা ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
মুহাম্মদ বিন আব্দুল হাদি মাকদিসি (রহ.) বলেন, তিনি হলেন ইস্পাহানের শহরে স্বীয় যুগের মুসনিদাহ। (তবাকাতু উলামাউল, হাদিস : ৪/৪৪৭)
ইমাম জাহাবি (রহ.) বলেন, তিনি নিজ সময়কার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সনদ বর্ণনাকারিণী। তিনি ইস্পাহানবাসীদের মধ্যকার ব্যক্তিত্ব যেমন—ইবনে হুসাইন বাগদাদবাসীদের জন্য।
(তারিখুল ইসলাম : ১১/৪০৪)
সে সময়ের অনেক বিখ্যাত ইমাম তাঁর থেকে হাদিস বর্ণনা করেন।
যেমন—আবুল আলা আত্তার, আবু মুসা মাদিনি, মামার বিন ফাখের এবং তাঁর দুই সন্তান আয়শা ও মুহাম্মদ, আবু জাফর ছায়দালানি, আবুল ফাখর আসআদ বিন রুহ, আফিফা বিনতে আহমদ, আবু সাঈদ আহমদ বিন মুহাম্মদ আরজানি, দাউদ বিন নিজামুল মুলক, শোয়াইব বিন হাসান সমরকন্দি, আব্দুর রহিম বিন ইখওয়াহ (রহ.) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।