আমি আফরোজা বেগম। আমি একজন গৃহিণী। আমার স্বামী একজন ব্যবসায়ী। কয়েক বছর আগে আমার স্বামী তাঁর ব্যাবসায়িক প্রয়োজনে আমার কিছু স্বর্ণালংকার বিক্রি করে দেন।
অলংকারগুলো আমার বাবা আমাকে বিয়ের সময় উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। অলংকারগুলো নেওয়ার সময় স্বামী বলেছিলেন, ‘আমি ঋণ হিসেবে নিচ্ছি। ব্যবসায় সুদিন ফিরলে তোমাকে পরিশোধ করে দেব।’ আল হামদুলিল্লাহ! তাঁর ব্যবসায় সুদিন ফিরেছে।
তিনি আমাকে কয়েকবার অলংকার ফেরত দিতেও চেয়েছেন। আমার জিজ্ঞাসা হলো, আমি স্বর্ণালংকার ফেরত নিতে পারব কি না? আর নিলে তার শরিয়তসম্মত পদ্ধতি কী?
উত্তর হলো, শরিয়তের দৃষ্টিতে স্বর্ণ ও রৌপ্য ঋণ দেওয়া জায়েজ এবং বাবার দেওয়া অলংকারের পরিপূর্ণ মালিকও আপনি। যেহেতু আপনার স্বামী আপনার অলংকারগুলো ঋণ হিসেবে নিয়েছিলেন, তাই তাঁর কাছে অলংকারগুলো পরিশোধের দাবি করার অধিকার আপনার আছে। এমনকি তিনি তা স্বেচ্ছায় পরিশোধ করতে না চাইলেও আপনি তাঁর কাছে পরিশোধের দাবি করতে পারেন।
স্বর্ণ বা রৌপ্য ঋণ দিলে পরিশোধের নিয়ম হলো স্বর্ণ ও রৌপ্য দ্বারা তা পরিশোধ করা। আর তা মূল্য দ্বারা পরিশোধ করলে বর্তমান বাজারমূল্যে পরিশোধ করা। পরিশোধের সময় স্বর্ণ ও রৌপ্যের মান (ক্যারেট) ও ওজন উভয়টি ঠিক রাখা আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে কমবেশি করা জায়েজ নেই। ইমাম শামি (রহ.) বলেন, ‘স্বর্ণমুদ্রা ও রৌপ্যমুদ্রা ঋণ নেওয়া জায়েজ আছে।
এমনিভাবে প্রতিটি এমন জিনিস ঋণ নেওয়া জায়েজ, যা পাত্রে মেপে, ওজন করে অথবা সংখ্যায় গণনা করে বিনিময় করা হয়।’
(ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/১৬২)
তিনি আরো বলেন, ফকিহরা বলেছেন—ঋণ তার অনুরূপ জিনিস দ্বারা পরিশোধ করা হবে। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৫২৫)
আল্লাহ সব বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল