দীপাবলিতে একজনের ঘরে অমাবস্যা, অন্যজনের ঘরে আলোর রোশনাই! দুইজনের পরিস্থিতি দুই রকম, কিন্তু একজাগায় দুই জনেরই দারুন মিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া দুই জনেই পাশে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। বুধবার নিজের মোবাইল থেকে টেক্সট করে মমতাকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী। পাল্টা সৌজন্য দেখিয়ে মমতাও সোনিয়াকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান। কিন্তু মমতাকে সোনিয়ার এই ম্যাসেজ পাঠানো শুধুই কি রাজনৈতিক সৌজন্য? না কি এর পেছনে কোন উদ্যেশ্য?
রাজনীতিবিদরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের একাংশ আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে সিপিআইএম-এর সঙ্গে সমঝোতা চাইলেও এই মুহুর্তে হাইকমান্ডের মাথায় অন্য অঙ্ক ঘুরপাক খাচ্ছে। সেখানে সংখ্যাবিচারে বামেদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে তৃণমূল।
ভারতের সংসদের দুই কক্ষে (রাজ্যসভা ও লোকসভা) তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা এখন ৪৬, বামেদের সংখ্যা ২১। তাই সংসদে মোদিকে কোনঠাসা করতে বামেদের চেয়ে তৃণমূলকেই বেশি ভরসা করছে সোনিয়া। অনেকের পাশাপাশি দিল্লির ১০ জনপথও (সোনিয়ার সরকারি বাসভবন) মনে করছে সামনের বিধানসভায় নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ফের বামেদের টেক্কা দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে বন্ধু হিসেবে বামেদের চেয়ে তৃণমূলর গুরুত্বই কংগ্রেসের কাছে বেশি।
অন্যদিকে, মমতাকে পাশে পেতে চাইছে গেরুয়া শিবিরও। আর সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি রাহুল সিনহাদের হতাশ করে আগামী ৩০ নভেম্বর কলকাতায় সভা বাতিল করেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিজেপির ভিতরের খবর পশ্চিমবঙ্গে এখন ধীরে চলো নীতি নিয়েই এগোতে চাইছে বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে তৃণমূল কি ভূমিকা নেয় আগে সেটাই দেখে নিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা। তাই অধিবেশন শেষের আগেই রাজ্যে এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে চাইছেন না বিজেপি সভাপতি।
সংসদে তৃণমূল সরকারের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কি অবস্থান নেয় তা দেখে নেওয়ার পরেই ঠিক হবে বিধানসভা ভোটে এ রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের লড়াইটা আসল থাকবে না ভুয়া। সেক্ষেত্রে দিল্লিতে তৃণমূল বিজেপির দিকে শান্তির হাত বাড়িয়ে দিলে আগামীবছর বিধানসভা ভোটে ঘাসফুল আর পদ্মফুলের কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব