দীপাবলি মানেই নতুন পোশাক, মিষ্টি আর অবশ্যই আতশবাজি। কিন্তু শব্দ দূষণ ও স্বাস্থ্যগত কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে হরেক রকম আতশবাজি। ফলে ইচ্ছে থাকলেও উৎসবপ্রিয় বাঙালির তা কেনা হয় না। রংবেরঙের আতশবাজি না পাওয়ায় দীপাবলির আনন্দেও যেন কোথাও একটু ভাটা পড়েছে। কিন্তু ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া সেই আতশবাজিই যদি আপনার খাওয়ারের তালিকায় স্থান পায়, তাও আবার কোন ক্যালরি ছাড়াই, তাহলে কেমন হয় ভাবুন তো? কলকাতার প্রখ্যাত মিষ্টি দোকানগুলি এবার আতশবাজির আদলে হরেকরকম লোভনীয় মিষ্টি নিয়ে এসেছে এই দীপাবলিকে কেন্দ্র করে। স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রেখে প্রতিটি মিষ্টিই রাখা হয়েছে ‘সুগার ফ্রি’ অর্থাৎ মধুমেয় (সুগার আক্রান্ত) রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। যদিও দেখে মনে হতেই পারে নামী-দামী কোম্পানির আতশবাজি। কিন্তু আদতে তা নয়। নিজের হাতে তুলে নিলেই এক মুহূর্তে ভুল ভাঙবে। মিষ্টির তালিকায় জায়গা পেয়েছে দোদমা, চরকি, রকেট থেকে শুরু করে একাধিক আতশবাজি।
কলকাতার প্রখ্যাত মিষ্টির দোকান গুপ্তা ব্রাদার্স-এর কর্ণধার গজেন্দ্র গুপ্তা জানান, ‘এই দীপাবলিতে আমরা এমন কিছু মিষ্টি বানিয়েছি, যা দেখতে অবিকল আতশবাজির মতো। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক আতশবাজিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর শিশুরা সেই সব আতশবাজিকে চোখে দেখেনি, সেগুলি সম্পর্কে তারা জানেও না। তাদের বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা এই মিষ্টি তৈরি করেছি। এগুলো প্রত্যেকটি সুগার ফ্রি, তাই শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও উপভোগ করতে পারবেন’।
পিছিয়ে নেই দক্ষিণ কলকাতার আরেক প্রখ্যাত মিষ্টি প্রস্তুতকারক সংস্থা গোকুল সুইটস্। দীপাবলিকে সামনে রেখে ক্রেতাকে টানতে তারাও হরেকরকম মিষ্টি তৈরি করেছে। প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার পর তা খেয়েও ফেলা যাবে যুব সমাজের উন্মাদনার দিকে খেয়াল রেখেই তৈরি করা হয়েছে ‘আইফোন-৭’ মিষ্টি। যা দেখতে অবিকল আসল আইফোনের মতো। পাশাপাশি থাকছে ইয়ারফোনও, খাওয়া যাবে সেটাও। চকচকে কাগজে মোড়া নতুন ধরনের এই ফোনটি-ই এখন এই মিষ্টি দোকানের সেরা আকর্ষণ।
গোকুল সুইটস্-এর মালিক লক্ষীকান্ত বালাসারিয়া জানান, ‘এবছর অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের দিকে খেয়াল রেখেই মিষ্টিতে নতুনত্ব আনা হয়েছে। তারা সবসময় পেস্ট্রি, কুকিস, চকলেট বেশি পছন্দ করে। তাই চলতি বছরে প্রতিটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলোকেই নতুন মোড়কে নিয়ে আসা হচ্ছে’।
দীপাবলিকে সামনে রেখে কলকাতার রাসেল স্ট্রিটের প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান গাঙ্গুর দোকানে এবারও থাকছে ‘দিল খুশান’। চিনি ও মসুরের সংমিশ্রণে এই মিষ্টি বড়ই সুস্বাদু। দোকানের কর্মকর্তা নবীন যোশি জানান, ‘গত ৪০ বছর ধরে আমাদের দোকানের ‘দিল খুশান’ মিষ্টি বিখ্যাত। চকলেটকে টেক্কা দিতে একাধিক নতুন মিষ্টিও তৈরি করা হয়েছে। আমরা চকলেট ও মিষ্টিকে মিশিয়ে নতুন ধরনের মিষ্টি তৈরি করছি’।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ অক্টোবর, ২০১৬/ আফরোজ