তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেতা তাপস পালের পর এবার ভারতের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই’এর হাতে আটক হলেন তৃণমূলের আরেক প্রভাবশালী সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়।
বেআইনি অর্থলগ্নিকারী সংস্থা ‘রোজভ্যালি’ এর সঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকা এবং বিভিন্ন সময়ে একাধিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার সুদীপ বন্দোপাধ্যায়কে আটক করে সিবিআই। মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন সুদীপ। দুই দফায় টানা প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এই সাংসদকে। কিন্তু সুদীপের বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপরই তাকে আটক করার সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই।
সূত্রে খবর তৃণমূলের এই সাংসদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে রোজভ্যালি ব্যবসাকে বাড়ানোর সাহায্যের অভিযোগ উঠেছে। এই অর্থলগ্নকারী সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুন্ডুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়েও বিভিন্ন সময়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়া রোজভ্যালির রুপিতে বিদেশ ভ্রমণ, ওই সংস্থায় সুদীপের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়েই এদিন সুদীপের কাছ থেকে জানতে চায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা। কিন্তু তার কোনটারই উপযুক্ত উত্তর দিতে পারেননি সুদীপ বন্দোপাধ্যায়।
যদিও সিবিআই’এর মুখোমুখি হওয়ার আগে এদিন সকালে বেশ খোশমেজাজে ছিলেন সুদীপ। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আছে, সেটা জানতে এসেছি’। যদিও এই জিজ্ঞাসাবাদের পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এই রোজভ্যালির আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৩০ ডিসেম্বর তাপস পালকে আটক করে সিবিআই। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই তৃণমূলের আরেক সংসদ সদস্যকে আটক করল সিবিআই। আগামীকাল বুধবার ভুবনেশ্বরের আদালতে তোলা হবে সুদীপকে।
এদিকে সিবিআই’এর হাতে সুদীপের আটক হওয়ার পরই দলনেত্রী ও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় নবান্নে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, নোট বাতিলের প্রতিবাদ করার জন্যই তৃণমূলকেও বন্দি করার চেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে আগামীকাল বুধবার থেকে দেশ জুড়ে লাগাতার আন্দোলন ও ধরনা চলবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূলের সাংসদদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মমতা। নোট বাতিল ইস্যুকে বড় কেলেঙ্কারি বলে অভিহিত করে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে আটকের দাবিও জানান মমতা। একইসঙ্গে বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও সুজন চক্রবর্তীকেও আটক করার দাবি জানান মুথ্যমন্ত্রী।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব