পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ভালোবেসে কেউ বললে তার বাড়ি গিয়েও বাসন মেজে দিয়ে আসবো। কিন্তু অন্যায় আবদার কোন মতেই মানবো না। আজ ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙড়ে একটি জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অতি সম্প্রতি গ্রামবাসীদের বিরোধিতার মুখে পড়ে ভাঙড়ে একটি পাওয়ার গ্রিড নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলেই মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন আমি আন্দোলন করতে করতে বড় হয়েছি। মানুষ বিপদে পড়লে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে রক্ষা করাটা আমার নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু কেউ যদি মনে করে যে বাইরে থেকে এসে বন্দুক ও বোমা দেখিয়ে রুপি সংগ্রহ করবেন আর কয়েকজন প্রোমোটারের কথায় ভাঙড়ে অশান্তির বীজ বপন করবেন সেটা চলবে না। আমি তিন মাস ধরে সহ্য করছি, তার অর্থ এটা নয় আপনারা যা ইচ্ছে তাই করে যাবেন। গ্রামবাসীদের যদি কোন আবদার থাকে তবে বলুন আমি দেখে নিচ্ছি। একটা কাগজে লিখে পাঠান আমি দেখে নিচ্ছি কোথায় কি অসুবিধা আছে। সমস্যা হলে আলোচনা করতে পারেন কিন্তু উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধ করা চলবে না।
গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘আপনাদের আবদার যদি ন্যায্য হয় তবে মানবো কিন্তু অন্যায় আবদার মানবো না। আমায় যদি কেউ বলে যে, দিদি আমার ঘরের বাসন মেজে দিয়ে যাও,তবে আমি বাসনটাও মেজে দিতে পারি। কারণ আমাকে যদি কেউ ভালোবেসে বলে। কিন্তু আমাকে চমকালে আমি জানি কি করে ওই কাজটা করতে হয়’।
সম্প্রতি দার্জিলিং’এ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা’র বিক্ষোভ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘দার্জিলিং’এ আমায় চমকে ছিল, পাহাড়ে আমাকে চমকে ছিল। কিন্তু আমি পাহাড়ে ঢুকেছি, বৈঠক করেছি, শান্তি রক্ষা করেছি, আবার ফিরে চলে এসেছি। ওরা দুই দিন দু’টো বোম ফাটাবে, আবার নিজেরাই চলে যাবে। এটা মনে রাখবেন গুন্ডারা কখনও দেশের সম্পদ হতে পারে না’।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভাঙড়ে শান্তি রক্ষা করুন, পাহাড়েও আমার আবেদন থাকবে যে কয়েকটা নেতার কথায় পাহাড়ে অশান্তি করতে দেবেন না। পাহাড় আমাদের মাদার ল্যান্ড, বাংলা আমাদের মাদার ল্যান্ড। আমরা শান্তি চাই, আমরা মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। মানুষের পাশে থাকতে চাই। কারণ এটা মা-মাটি-মানুষের সরকার। তাই এলাকা যত ভালো থাকবে ও শান্ত থাকবে মানুষও তত ভালো থাকবে’। এদিনের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্য জুড়ে ১৮ হাজার কিলোমিটার নতুন রাস্তার আনুষ্ঠানিক সূচনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার