অফিস থেকে ছুটি নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন চিকিৎসা করাতে। তার মধ্যেই সময় বের করে ভ্রমণেরও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নিয়তির কাছে হার মানতে হল, লাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে দুই তরুণ বাংলাদেশি নাগরিককে।
শুক্রবার গভীর রাতে ঘটা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন কাজী মহম্মদ মইনুল আলম (৩৬) ও ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন গোপালগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুর রহিম মোল্লা (২৩)। এদিকে দুর্ঘটনার পরই গা ঢাকা দেয় জাগুয়ারের চালক। যদিও শনিবার দুপুরের দিকে আরসালান পারভেজ নামে ঘাতক গাড়িটির চালকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।
শেক্সপিয়ার সরণী থানার এক কর্মকর্তা জানান ‘রাতে প্রচন্ড শব্দ শুনেই তারা থানার বাইরে বেরিয়ে আসেন এবং আহতদের সকলকে থানায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।’
এদিকে শনিবার সকালেই বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করে শেক্সপীয়র সরণী থানার পুলিশ। এদিন সকালে থানায় আসেন মিশনের কাউন্সেলর-ইন-কনস্যুলার মহম্মদ বশির উদ্দিন। পরে হাইকমিশনের এই কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের ঝিনাইদহের বাসিন্দা কাজি মহম্মদ মইনুল চোখের চিকিৎসা করাতে কলকাতায় এসেছিলেন। অন্যদিকে সিটিব্যাঙ্কের কর্মী ফারহানা ইসলাম ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ভ্রমণের জন্য এখানে এসেছিলেন। বৃষ্টির কারণেই তারা ওই পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেসময়ই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।’
হাইকমিশনের পক্ষে নিহতদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুই বাংলাদেশির নাগরিকের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর সমস্ত আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার বিকাল সাড়ে তিনটা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রাজ্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিনিধিরা। প্রথমে দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাগুয়ার গাড়ি, পরে মার্সিডিজ গাড়িটি থেকে আলামত সংগ্রত করেন। ঘুরে দেখেন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ পুলিশ বক্সটিও।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মীর ওয়াসিম রাজা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আমরা দুইটি গাড়িই পরীক্ষা করেছি। দুইটি গাড়ির ইভেন ডেটা রেকর্ডার, ইফোটেইনমেন্ট সিস্টেমস টেলিমেটিক্স থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল