জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-এর নামে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একজন মানুষকেও রাজ্য ছাড়া হতে হবে না। ভারতের প্রতিটি নাগরিকই সসম্মানে মাথা তুলে তার অধিকারে বাংলায় থাকবে-এমনই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যটির পৌর ও নগরোয়ন্ননমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
গত ৩১ আগস্ট আসামে প্রকাশিত এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে ১৯ লাখের বেশি নাম। বিজেপি জানিয়েছে, সরকারে ক্ষমতায় এলে তারাও বাংলায় এনআরসি চালু করা হবে। যদিও এনআরসি চালু করার ব্যাপারে সরকারিভাবে এখনও কিছুই ঘোষণা করা হয়নি। তবু আসামের আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে বাংলাতেও। নাগরিকত্বের প্রশ্নে প্রমাণ বা নথি সংগ্রহের জন্য রাজ্যটির বিডিও অফিস, পৌরসভা, কর্পোরেশন, ব্যাংক, পোস্ট অফিস-এ ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কখনও কখনও আত্মহত্যা, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
সেই প্রসঙ্গেই শুক্রবার কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘এনআরসি নিয়ে সব জায়গায় আতঙ্ক রয়েছে। কলকাতা পৌরসভার সব জায়গাতেই ভিড় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি টেলিভিশনের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন। আমাদের তরফেও আবেদন জানানো হচ্ছে।’
কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে নিশানা করে ফিরহাদ বলেন, ‘এমন একটা দল ভারত চালাচ্ছে- যারা মানুষকে আতঙ্কিত করে বেড়াচ্ছে। একটা দল যখন সরকারে থাকে তাদের উচিত মানুষের হৃদয় জয় করা। যেমন আমরা করে চলেছি। কিন্তু গোটা ভারত আজ রামগড় হয়ে গেছে আর গব্বর সিং এটা চালাচ্ছে। এটা অত্যন্ত খারাপ হচ্ছে। ভারতের নাগরিক হয়ে ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে থাকবো-আমরা সেই ভারতের স্বপ্ন দেখিনি।’
তাঁর প্রশ্ন, ‘আমরা কেন ভীত হয়ে হুড়োহুড়ি করে নথি সংগ্রহ করবো। আমাদের রাজ্যেই অনেক জায়গায় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হবে?’
রাজ্যের মানুষকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সজাগ আছেন, বাংলার মানুষ যেন তার ওপর ভরসা রাখেন। উনি যতদিন আছেন এ রাজ্যের একজন মানুষকেও বাংলা ছেড়ে যেতে হবে না। একটা মানুষও বিতাড়িত হবেন না। ভারতের প্রতিটি নাগরিকই সসম্মানে মাথা তুলে তার অধিকারে এখানে থাকবে।’
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব