কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের শ্রমিক বিরোধী নীতির প্রতিবাদে বাম-কংগ্রেসসহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা ভারতজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
সিপিএমকে নিশানা করে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'তোমার হরতালকে কে মানে? তোমরা লুপ্তপ্রায় প্রাণী হয়ে গেছো। কোন দিন হয়তো চিড়িয়াখানায় থাকবে, আর আমরা পয়সা দিয়ে তোমাকে দেখতে যাব। এই সিপিআইএম ডায়লগ মারছে। সিপিআইএম একটা পার্টি, আর চামচিকাও একটা পাখি। কমিউনিস্ট'এর মত দুরাচারী, অত্যাচারী, মিথ্যাচারী পৃথিবীতে আর কোন মতবাদ নেই।'
বুধবার সকালে কলকাতার লাগোয়া নিউ টাউন ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণ সেরে নিউটাউনের জ্যোতিনগরে চা চক্রে যোগ দেন দিলীপ। তার অভিযোগ, 'পশ্চিমবঙ্গকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে আমাদের সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল, কিন্তু আমরা পিছন থেকে ঠেলা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। বনধ সংস্কৃতির দিন শেষ। মানুষ এখন আর বনধ চায় না। আর বনধকে যারা নৈতিক বা অনৈতিকভাবে সমর্থন জানাচ্ছে তাদেরও মানুষ চায় না।'
হরতালকে ঘিরে রাজ্য সরকারের অবস্থানকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'এরা দুদিকেই আছে। কখনো লোকের মন রাখছে, কখনো সিপিএমের মন রাখছে। আগামী দিনে সকালে একসাথে সকলকে পতাকা নিয়ে বেরোতে দেখা যাবে। আমাদের মত গরীব দেশে কোনো হরতাল হওয়া উচিত নয়। সবাই কাজ করতে যায়, সবাইকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। একদিন দেশকে আটকে রাখার অর্থ অনেক ক্ষতি হওয়া।'
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তিনি বলেন, 'ভারত সরকার নতুন একটা আইন করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান এই তিনটি মুসলিম রাষ্ট্রে যে সমস্ত হিন্দু, শিখ, খ্রীস্টান, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মানুষ ছিলেন, তাদের উপর অকথ্য অত্যাচার হওয়ার জন্য তারা ওই দেশ থেকে ভারতে চলে এসেছেন-তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হবে।'
তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মমতা ব্যানার্জি ২৫ বছরের এমপি ছিলেন। কিন্তু একবারও তিনি উদ্বাস্তুদের হয়ে একটা মিছিলে অংশ নেননি, অথচ রাজীব কুমারের মতো চোরেদের বাঁচাতে তিনি ধর্নায় বসেছিলেন। তিনদিন ধরে যারা বাস-ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করেছিল, মমতা ব্যানার্জি তাদের হয়ে পথে নেমেছেন।'
দিলীপ ঘোষের আরও অভিযোগ, 'মমতা ব্যানার্জি ৫০ লাখ অনুপ্রবেশকারীর ভোট পেয়ে জিতেছেন, যদি কোন কারণে তাদের নাম কাটা যায় তবে তিনি হেরে ভূত হয়ে যাবেন, ৫০ টা আসলো তিনি বিধানসভায় পাবেন না। তাই এখন থেকে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছেন। সিপিআইএমও গত ৩৪ বছর ধরে উদ্বাস্তুদের ভোটে জিতেছে। অথচ তাদের নাগরিকত্ব দেয়নি। আজকে আমরা যখন নাগরিকত্ব দিচ্ছি তারা বিরোধিতা করছে। এদেরকে চিনে রাখুন। এরা আমাদের অনেক ধোঁকা দিয়েছে। রাস্তায় বেরিয়ে আবার নাটক করছে। দিল্লিতেও ওরা নাটক করছে। নিজেরাই মারছে, আবার নিজেরাই মাথায় ফেটি বেঁধে ছবি তুলছে। বেহায়ার দল, নির্লজ্জের দল। এদের লজ্জা হওয়া উচিত।'
বিডি প্রতিদিন/হিমেল