গরু ও কয়লা পাচারের পর এবার বালি-পাথর পাচার নিয়ে সক্রিয় হল ভারতের ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বালি ও পাথর পাচারে মামলা দায়ের করতে শুরু করেছে ইডি। বলা যায়, গরু ও কয়লার পর এবার ইডি'র নজরে বেআইনি পাথর ও বালি পাচার।
এই বিষয়ে আলাদা করে তদন্তে নেমেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সম্প্রতি দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূমের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। অভিযান চালায় একাধিক বালি ও পাথর ব্যবসায়ীর বাড়িতে। সেখান থেকেই নানা তথ্য মেলে বলে ইডি সূত্রে খবর। এরপরই দিল্লি থেকে তদন্তের সবুজ সঙ্কেত মেলে।
বালি ও পাথর পাচার কাণ্ডে বেশকিছু পরিচিত নাম উঠে আসছে বলে জানা গেছে দেশীর গণমাধ্যম সূত্রে। এরপরই নড়েচড়ে বসে ভারতের কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সুতরাং এখানে গরু-কয়লা পাচার কাণ্ডের অভিযুক্তদেরও সন্দেহের বাইরে রাখছেন না তারা। দুইটি ক্ষেত্রেই আলাদা করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যেই ইডির নজরে রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস কোথায় তাই জানতে তৎপর গোয়েন্দা সংস্থা।
যদিও অনুব্রতর গ্রেফতারি মূলত গরু পাচারের মামলাতেই। সেই মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতিকে জেরা করতে গিয়ে বালি-পাথর পাচার সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারীদের দাবি, এই পাচারের দরুন রাজ্য সরকারের কয়েকশো কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
সূত্রের খবর, বীরভূমের বৈধ ও অবৈধ যত ঘাট থেকে বালি উত্তোলন হয়, তার দুইদিক থেকে টাকা যেত অনুব্রতর কাছে। কীভাবে? বৈধ বালিঘাটের মালিকদের থেকে মাসে দেড় লাখ টাকা তোলা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আবার বৈধ ঘাট ছাড়া রয়েছে অসংখ্য অবৈধ ঘাট। প্রশাসনের নাকের ডগাতেই যেখান থেকে বছরের পর বছর ধরে বালি তোলা ও পাচার হচ্ছে। যার অধিকাংশই অনুব্রত ঘনিষ্ঠ দুইজন নিয়ন্ত্রণ করে বলে অভিযোগ। এই অবৈধ ঘাটগুলি অলিখিতভাবে অনুব্রতর বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। সে কারণেই অবৈধ ঘাটের বালির লভ্যাংশের ৭০ শতাংশ যেত অনুব্রত কাছে। বাকি ৩০ শতাংশ পেত সেই বালি মাফিয়ারা।
অন্যদিকে, বীরভূমের দুবরাজপুর থানার পুলিস শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে অবৈধ বালি বোঝাই দুইটি ১৬ চাকা ট্রাক ও দুইটি ট্রাক্টর আটক করেছে। দুবরাজপুরের সিআই মাধব চন্দ্র মণ্ডলের নেতৃত্বে বিরাট পুলিস ফোর্স সেদিন রাতে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কের তরুলিয়া মোড়ের কাছ থেকে অবৈধ বালি বোঝাই দুটো বড় ট্রাক ও দুটি ট্রাক্টর আটক করে। তারপরেই গ্রেফতার করা হয় দুইটি ট্রাকের ড্রাইভারকে।
আজ শনিবার তাদের দুবরাজপুর আদালতে তোলা হবে। জানা গেছে, দুটো ট্রাক ও ট্রাক্টর দুটি অজয় নদ থেকে অবৈধভাবে বালি বোঝাই করে পাচার হচ্ছিল। পুলিসের কাছে খবর আসতেই গাড়িগুলো আটক করে। প্রসঙ্গত, এর আগেও দুবরাজপুর থানার পুলিস প্রচুর অবৈধ বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ