আগামী বছরের গোড়ার দিকে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে দলে শুদ্ধিকরণের ডাক দিলেন রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সৌগত রায়।
এমনিতেই স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচার, কয়লা পাচারসহ একাধিক দুর্নীতিতে দলটির শীর্ষ নেতাদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের নেতা অনুব্রত মণ্ডল, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যসহ একাধিক নেতা-নেত্রী এমনকি সাবেক সরকারি কর্মকর্তারাও গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এরই মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই দলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল, নতুন-পুরনোদের মধ্যে বিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অস্ত্র-গোলাবারুদসহ আটক হয়েছেন তৃণমূলের নেতারাও। ফলে ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে যথেষ্ট অস্বস্তিতে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল।
এমন এক পরিস্থিতিতে দলের শুদ্ধিকরণের ডাক দিলেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্যটির উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কামারহাটি নজরুল মঞ্চে বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তিনি বলেন, ‘এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আমাদের সংকল্প হলো পঞ্চায়েত এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক। সকলে ভোট দিক এবং আমরা তৃণমূল কংগ্রেস যাতে জয়ী হয়’।
তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার সময় এসেছে। আর্থিক সুবিধার জন্য যারা দলে এসেছিলেন বা এখনও আছেন তাদেরও দল থেকে সরে যাওয়ার সময় এসেছে। তার কারণ আমাদের দলের ৯৫ শতাংশ কর্মী দলের জন্য সৎভাবে কাজ করছেন, আমরা চাই না যে কিছু লোক তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য দলের ভাবমূর্তিকে মলিন করে দেয়, এরকমটা আমরা চাই না’।
তৃণমূলের এই সিনিয়র নেতা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘তৃণমূলের লড়াইটা নিজেদের সঙ্গে, অর্থাৎ নিজেদেরকে আরও পরিশুদ্ধ করা, পরিষ্কার করা, স্বচ্ছ করা ও জনমুখী করার লড়াই’।
ওই একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, ‘আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে, মেরে কেটে পঞ্চায়েত দখল করে নেব, এই চিন্তা থেকে সরে আসতে হবে। মেরে পঞ্চায়েত নিতে চাই না। কোথাও কোন ভুল হলে দলের কর্মীরা সরাসরি নেতাদের কাছে বলুন। নেতার অন্যায় হলে নেতাকেও তা স্বীকার করে নিতে হবে। কিন্তু দয়া করে এমন কিছু করবেন না যাতে, আমার পাপের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো ক্ষতি হয়’।
ভোটের আগে তৃণমূলের শুদ্ধিকরণকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি রাজ্য যুব মোর্চার কনভেনর জয় সাহা বলেন, ‘চোর যদি বলে চুরি করবো না, তবে কি তার সংসার চলবে? মেরে কেটে ভোট না করলে তৃণমূল একটাও আসন পাবে না’।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা