শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন

নওগাঁয় দিন দিন বাড়ছে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ। সময়, শ্রম ও খরচ কম হওয়ায় এবং ভালো দাম পাওয়ায় এই সবজির আবাদ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক। নওগাঁর এই মিষ্টি কুমড়া এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সবজির বীজ বপনের সময় শীতকালীন ফসলের জন্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস। সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়ন সবজি এলাকা হিসেবে খ্যাত। মৌসুমি সবজি আলু, পটোল, শিম, বেগুন, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, করলাসহ বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদ হয়ে থাকে এখানে। মৌসুমভিত্তিক ফসল চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে কৃষকদের। ফলে প্রতি বছরই মিষ্টি কুমড়ার আবাদ বাড়ছে।

সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আজিজুল ইসলাম বলেন, ছয় কাঠা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছি। চাষ, সার, ওষুধ ও অন্যান্য খরচ হয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা। বিক্রি করেছি আট হাজার টাকা। উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের খাইরুল আলম বলেন, মিষ্টি কুমড়া আবাদে বিঘা প্রতি খরচ হয় প্রায় ১৬-১৮ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় প্রায় ১০০-১২০ মণের মতো উৎপাদন হয়। পাইকারি দরে ৮-১০ টাকা কেজিতে প্রতিটি কুমড়া বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। বর্ষাইল গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা কোনো ফসলের ন্যায্য দাম পাই না। আমরা যে মিষ্টি কুমড়া ৮-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে। কৃষকের চাইতে ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হয়। সরকার নজরদারি বাড়ালে ন্যায্য দাম পেতাম এবং লাভবান হতাম।

সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া আড়তে নিয়ে আসে। এ এলাকার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া সুস্বাদু হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদাও বেশি। এখান থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০-২৫ মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া ঢাকা, যশোর, খুলনা, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, মাটিতে নষ্ট হওয়ায় গত কয়েক বছর থেকে চাষিরা মাচা করে আবাদ করছেন। মিষ্টি কুমড়ার আবাদে সঠিক সময়ে পরাগায়ন হলে উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়। মৌসুমভিত্তিক ফসল চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফলে কৃষকদের মাঝে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। জেলায় এ বছর ৩৬৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭৫ হেক্টর, বদলগাছী উপজেলায় ৬০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ৬০ হেক্টরসহ অন্যান্য উপজেলায় কম বেশি মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়।

সর্বশেষ খবর