মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রশ্ন হাই কোর্টের

দেশটা কি হরিলুটের জায়গা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে হাই কোর্ট প্রশ্ন করেছেন, এ দেশটা কি হরিলুটের জায়গা? ছলে-বলে-কৌশলে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সে ঋণের টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এভাবে কি টাকা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে? আমরা কি এটা মেনে নিতে পারি? ‘জি বি হোসেন বনাম দুদক এবং অন্যান্য’ মামলার শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এসব প্রশ্ন করেন।

জাহাজ ব্যবসায়ী গাজী বেলায়েত হোসেন জি বি হোসেন নামে পরিচিত। কানাডারও নাগরিক তিনি। জাহাজ আমদানির কথা বলে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিলেন। দুদকের অভিযোগ জাহাজ আমদানির নামে নেওয়া ঋণের পুরোটাই হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর ২০১৯ সালে এই জি বি হোসেনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক। সেই নিষেধাজ্ঞার আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাই কোর্টে রিট করেন। ওই রিটের ওপর শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেন। পাশাপাশি রুল জারি করেন।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই রুলের শুনানি চলছিল। ওই দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘বিদেশে সম্পদ কেনার উৎসব’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে তিন আইনজীবীর কাছে কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন হাই কোর্ট। অন্য দেশের নাগরিকত্ব আছে এমন ব্যক্তি দেশের আয় দিয়ে ওই দেশে সম্পত্তি কিনতে পারেন কি না, তারা ব্যাংক ঋণ নিতে পারেন কি না, দ্বৈত নাগরিকদের বিষয়ে সংবিধান ও আইনে কী কী বাধ্যবাধকতা আছে?

এসব প্রশ্নে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান, মনজিল মোরসেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিকের বক্তব্য চাওয়া হয়। সে ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে একে একে তিন আইনজীবীই আদালতে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন আসামি জি বি হোসেনের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজলও।

পরে আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য শোনার তারিখ রেখে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে বাড়ি ও সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে উৎসব চলছে বাংলাদেশিদের। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রের পর দুবাই ও লন্ডনে হিড়িক পড়েছে সম্পদ কেনার। আগে আগ্রহের স্থান ছিল সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া। এখন সম্পদ কেনার পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে বাংলাদেশিরা এখন সম্পদ কেনায় ধনী দেশের নাগরিকদের টপকিয়ে দখল করে নিচ্ছেন শীর্ষস্থানগুলো।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর