পরিত্যক্ত গোয়ালঘরের মতো একটি ডাকঘর। অবস্থান নেত্রকোনার কলমাকান্দায়। নাম ‘বড়খাপন ডাকঘর’। এই ডাকঘরে কোনো কার্যক্রম হয় না। পোস্টমাস্টার নিজে থাকেন নেত্রকোনা শহরে। কিছু টাকা দিয়ে ডাকঘরের জন্য ভাড়ায় রেখেছেন একজনকে। তার কাজ মাঝে মধ্যে কিছু চিঠি বিলি করা। এই ডাকঘরের চিঠির বাক্স নামেই, জং ধরা একটি আদল মাত্র। ডাকঘরের ভিতরেও কিছু নেই; তবে রাখা হয়েছে একটি নৌকা। এমন ডাকঘরে কী কাজ হয়- এলাকার কেউ কিছুই বলতে পারেন না। এই ডাকঘরের কারণে চাকরি পেয়েও পথে বসেছেন স্থানীয় এক যুবক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাকরিতে যোগদানের চিঠি আটকে রাখায় পাওয়া চাকরি হারিয়েছেন দরিদ্র পরিবারের যাইনুল আবেদীন নামের এক যুবক। তার বাড়ি বড়খাপন ইউনিয়নের বাঘসাত্রা গ্রামে। দিনমজুর আলী আকবর ও সাহেরা খাতুনের পাঁচ ছেলের মধ্যে একমাত্র যাইনুল আবেদীনকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করিয়েছে দরিদ্র পরিবারটি। মা-বাবার ইচ্ছা পূরণে মেধাবী পরিশ্রমী যাইনুল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ফিল্ড অফিসার হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই নিয়োগপত্রের রেজিস্ট্রি চিঠি ২১ জুনের আগে পাওয়ার কথা থাকলেও এই ডাকঘরের কারণে তা প্রায় দেড়মাস পর ১৩ আগস্টে পৌঁছায়। ফলে ওই চাকরিতে আর যোগ দেওয়া হয়নি যাইনুলের। চাকরিহারা হয়ে তার সঙ্গে গোটা দরিদ্র পরিবারটির মাঝেই নেমে এসেছে ‘মৃত্যুশোক’। এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবি করে গত বৃহস্পতিবার যাইনুল আবেদীন ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত চিঠি দিয়েছেন। স্থানীয়রাও দায়িত্বহীন কাজের নিন্দা জানিয়ে পোস্টমাস্টার মিনহাজুর রহমানের শাস্তি দাবি করেছেন। এছাড়া নেত্রকোনা প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার শাহেদুন্নাহার বিষয়টি জেনে দুঃখ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী যুবকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন।