২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক দুই ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং তৎকালীন প্রক্টর গোলাম রাব্বানীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান মামলাটি দায়ের করেন। গতকাল বিকালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর।
এজাহারে ঢাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাকিব হাসান সুইম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি পরে উপাচার্য হওয়া অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ঢাবির সাবেক উপউপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদকে আসামি করা হয়েছে।
এর বাইরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে ছাত্রলীগের ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীকে মামলায় আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে রাশেদ খান উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ অতর্কিত হামলা ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করলে ঢাবির বিভিন্ন হলসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যোগ দেন।
তিনি উল্লেখ করেন, হঠাৎ ৯ এপ্রিল রাত ১টার দিকে ‘ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ’ লেখা টি-শার্ট পরিহিত যুবকরা ভিসির বাসভবনের গেট ভেঙে সেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল ঢাবির জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এস এম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
রাশেদ খান বলেন, ১ জুলাই শেখ হাসিনাকে কটূক্তির মামলায় আমাকে (রাশেদ খান) গ্রেপ্তারের পর ৮ জুলাই ভিসির বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। দুই মামলায় আদালত আমাকে ১৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে পাঠায়। পুলিশ হেফাজতে ও রিমান্ডে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।
মামলার এজাহার দায়ের শেষে সাংবাদিকদের রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়েও তখন ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তারা এ ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। এ ছাড়া আল নাহিয়ান খান জয় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের আমলে মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে সেটি নেওয়া হয়নি।
রাশেদ খান আরও বলেন, এ হামলার ঘটনায় তখন তদন্ত কমিটি হয়েছিল। আমরা সব তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার পরও সেটি আলোর মুখ দেখেনি। সেদিন কারা আগুন দিয়েছিল, তা খুঁজে বের করতেই এ মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা শুনেছিলাম, তখন আমরা (ডাকসু নির্বাচনে) ১১টি পদে জয়ী হয়েছি। তবে আমাদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ কারচুপি এবং হামলার তদন্তে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তারা এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি করেছেন।