সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শেষ বছরের চেয়ে দৈনিক অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারের তুলনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ মেয়াদে তিন গুণ বেশি হলেও সন্তুষ্ট নয় ট্রাম্প প্রশাসন। গ্রেপ্তারের দৈনিক এ হার ৩ হাজারে উন্নীত করার জন্যে আইসকে (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) চাপ দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার এ তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন বুধবার।
ট্রাম্পের এই টার্গেট পূরণে আইসকে বারংবার তাগাদা দিচ্ছেন স্টিফেন মিলারের ন্যায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টি নয়েমও। অভিবাসন দপ্তরের দেখভালের দায়িত্বে ট্রাম্প-নিয়োজিত এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে অবৈধভাবে বসবাসরত দুর্বৃত্তদের শনাক্ত এবং বহিষ্কারের পক্ষেই আমেরিকান ভোটারেরা রায় দিয়েছেন এবং বিভিন্ন জনমত জরিপেও তা দৃশ্যমান হয়েছে। সে আলোকেই বাইডেনের চার বছরের জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজ করা হচ্ছে এবং সব অবৈধকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়েই সামাজিক নিরাপত্তা সুসংহত করা সম্ভব হবে। এজন্য প্রতিদিনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাগিদ দিচ্ছেন গ্রেপ্তার অভিযানকে জোরদার করতে। এই উদ্যোগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। হার্ভার্ড, কলম্বিয়া, ইউপেন, ইয়েল, এমআইটিসহ সেরা ভার্সিটিসমূহে বাংলাদেশিসহ বিদেশি শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে অন্য দেশে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া অব্যাহত রাখার চেষ্টা শুরু করেছেন। প্রতিদিনই ট্রাম্প প্রশাসনের নিত্যনতুন কঠোর পদক্ষেপে তারা স্বস্তি পাচ্ছেন না।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হার্ভার্ড, কলম্বিয়াসহ আইভি লীগ ভার্সিটিসমূহে বিদেশি শিক্ষার্থী সংগে কাচনের যে মনোভাব গ্রহণ করা হয়েছে তা নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সর্বত্র। বিশেষ করে ১১ লক্ষাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর পৌনে ৩ লাখ হচ্ছেন চায়নিজ, তাদের ভিসা বাতিলের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ধারণা, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে বড় ধরনের হুমকি। এ ছাড়া, অপরাপর দেশের শিক্ষার্থীর বড় একটি অংশ হচ্ছেন বামপন্থি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার অনুসারী, তারাও যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে হুমকি। অর্থাৎ এরা কেউই যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির পরিপূরক নন।
‘আমরা এমন কাউকে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করতে দিতে চাই না যারা আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের শত্রু এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকিস্বরূপ’- উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা করেছেন, চায়নিজদের স্টুডেন্ট ভিসা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং নতুন করে যারা আবেদন করবে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাইয়ের পর প্রসেস করা হবে। একই সঙ্গে স্টুডেন্ট ভিসার ইন্টারভিউ স্থগিতের আদেশও জারি করা হয়েছে ২৮ মে।