কৃষক হত্যা দিবস পালন করলো বাংলাদেশ কৃষক লীগ। এ উপলক্ষে আজ রবিবার দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
কৃষক লীগের সভাপতি সমির চন্দ চন্দ্রের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান। এতে বক্তৃতা করেন মুক্তিযোদ্ধা শরীফ আশরাফ আলী, শেখ জাহাঙ্গীর আলম, মোস্তফা কামাল চৌধুরী, রেজাউল করিম রেজা, হোসনে আরা, বিশ্বনাথ সরকার বিটু, আকবর আলী, সাখাওয়াত হোসেন সুইট, আসাদুজ্জামান বিপ্লব, শহীদ কৃষক পরিবারের সন্তান মেহেদী হাসান মুনকির প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে ১৮ শহীদ কৃষক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। একইভাবে সারাদেশে কৃষক হত্যা দিবস পালন করে বাংলাদেশ কৃষক লীগ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার আমলে সারের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকায় ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এসময় কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি উন্নয়নে নানা ধরনের কৃষিবান্ধব নীতি ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছে। বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ সকল কৃষি উপকরণের দাম কমানোর মাধ্যমে কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য একের পর এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। এর ফলে কৃষি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এখন লক্ষ্য হলো পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতকরণ এবং কৃষিকে লাভবান করা।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার সারে ভর্তুকি দিচ্ছে। সম্প্রতি ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের দাম প্রতি কেজিতে ৯ টাকা করে কমিয়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ২৫ টাকা থেকে ১৬ টাকা করা হয়েছে। ফলে কোনো কৃষককে সারের জন্য আন্দোলন করতে হয় না। সারের জন্য জীবন দিতে হয় না। অথচ, বিএনপি সরকারের সময় এই সারের জন্য কৃষকদের আন্দোলন করতে হয়েছে। জীবন দিতে হয়েছে। বিএনপি সরকার সারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষক জনতার উপর নির্বিচারে গুলি করে ১৮ জন কৃষক জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে দলটি আর কখনও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া শুধু কৃষকের রক্ত নয়, শ্রমিক, ছাত্রদেরও রক্ত নিয়েছে। ইতিহাস তার বিচার করতে ভুল করেনি। আজকে খালেদা জিয়া শুধু দণ্ডিত আসামি নন, তিনি এতিমের অর্থ আত্মসাতের দায়ে দণ্ডিত হয়েছেন, কারাগারে আছেন। এটাই হলো পাপের শাস্তি। তার (খালেদা জিয়ার) ছেলে তারেক রহমান মানি লন্ডারিংয়ের অর্থপাচারের অপরাধে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। আজকে তারেকের পরিণতি কী? তারেক জিয়া বাংলার মাটিতে আসতে পারে না। বাংলাদেশে কোনো দিনই তারেক জিয়া আর ফিরে আসতে পারবে না। বিএনপি নামক এই দল, যে দল ১৮ জন কৃষকের জীবন নিয়েছে তারা আর কোনোদিনই ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
কৃষক লীগের সভাপতি সমির চন্দ চন্দ্র বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। সে কারণেই কৃষককে সারের জন্য গুলি খেতে হয় না। কৃষক পণ্য উৎপাদন করে বলেই আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছি। মাছ চাষে বিশ্বে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমরা সারাদেশে বিনামূল্যে কৃষকের সেবা চালু করেছি। গরীব কৃষকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান ও কৃষি পণ্য সরবরাহ করবো।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম