দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মালম্বীদের পূজামণ্ডপে হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবার আমাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো, এ কথা সত্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার পর ষড়যন্ত্রকারীরা দুএকটা জায়গায় সহিংসতার যে চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন আমরা সতর্ক। আর কোথাও এই ধরনের অপশক্তিকে মাথা তুলতে দেয়া হবে না।
রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি ‘স্বপ্ন ও সম্ভাবনার স্ফুলিঙ্গ: শেখ রাসেল' শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি, শিক্ষা উপকরণ ও দরিদ্র তহবিলে বিশেষ অনুদান প্রদান করা হয়।
বিএনপি সব সাম্প্রদায়িক শক্তির মূল ঠিকানা-এমন মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, গত ১২ বছরে দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের হামলার ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু আজ অন্ধকারের শক্তি তারা এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা বুঝে ফেলেছে যে শেখ হাসিনা সরকারকে ভোটে হারানো যাবে না, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জনগণ সাড়া দিবে না। নিবার্চনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকায় মাঝে মাঝে দেখা যায়, জামায়াত-বিএনপি আলাদা হয়ে যাচ্ছে। দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এটা আসলে কিছুই না। গোপনে গোপনে তাদের যে পিরিতি রয়েছে, তা আর কারো নেই।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বডুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।
শেখ রাসেলের জীবনীর উপর অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল হালিম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
অনুষ্ঠানে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, আজকে শহীদ শেখ রাসেলের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তার চেতনা লালন করা মানেই হলো জাতির পিতার অসম্পূর্ণ কাজকে বাস্তবায়ন করা। আজকে যারা বারবার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চাচ্ছে এসব চক্রান্তকারীদের বিষয়ে সচেতন হতে হবে, তাদের মোকাবেলা করতে হবে। আমাদেরকে আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের সবাইকে এক হয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ১৯৭৫ সালের কালো রাতে বঙ্গবন্ধু, শেখ রাসেলকে হত্যার মধ্যদিয়ে তারা আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণের কারিগর ও বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে তারা নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। সেই রাতে বেঁচে থাকা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নহারা বাংলার মানুষদের পুনরায় উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আজকে আমরা রাসেলের কথা স্মরণ করছি। সেদিন সন্ত্রাসীরা একজন সম্ভাবনাকে হত্যা করেছিল।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন