স্বৈরাচারী শক্তির সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।
তিনি বলেছেন, ‘ঐক্যবদ্ধ থাকলে অতীতে পারেনি, ভবিষ্যতেও কোনো ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’
রবিবার দুপুরে রাজধানীর ভাষানটেক ৩ নম্বর মোড় বিআরপি কমপ্লেক্স মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর ভাষানটেক থানা বিএনপির কর্মীসভা ও রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমিনুল হক বলেন, ‘গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা সহ্য করেছে। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার বিএনপিকে বহুভাবে ষড়যন্ত্র করে ভাঙার চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোনো চেষ্টাই তাদের সফল হয়নি। কারণ বিএনপি এ দেশের গণমানুষের দল। বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে কাজ করে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, কিন্তু এখনো পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি। বাংলাদেশের সব ক্ষমতার উৎস হচ্ছে এ দেশের জনগণ। এই জনগণকে নিয়েই আমাদের পথ চলা, আমাদের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গত ১৭ বছরে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে উদ্ধার করতে, রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন ও সংস্কার করার জন্য,
বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে, জনগণের অধিকার তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠন করার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফার রূপরেখা দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই ৩১ দফার রূপরেখা নিয়ে আমাদের ইতোমধ্যে বিভাগীয় জেলা ও থানা পর্যায়ে আমরা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করবে।’
বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিকামী দেশ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারটা তখনই পরিপূর্ণ করা যাবে, যখন দেশে একটা নির্বাচিত সরকার আসবে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া পরিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার সম্ভব নয়।’
অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখছি, এখনো বিভিন্ন কাজের অনুমোদন ও কাজ বরাদ্দ বাবদ ঘুষ নেওয়া হয়। আমরা স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে এটা দেখতে চাই না। আমরা চাই প্রতিটি কাজ নিরপেক্ষ করে যাচাই-বাছাই করে প্রত্যেকের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হোক।’
আমিনুল হক বলেন, ‘স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, কিন্তু তাদের প্রেতাত্মারা এখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বসে ঘুষের প্রথা অব্যাহত রেখেছে। আজকেও একটি পত্রিকায় রিপোর্ট দেখলাম- কৃষকদের কীটনাশকের অনুমোদন ও বরাদ্দের জন্য ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। এই ঘুষ বাংলাদেশের মানুষ আর দেখতে চায় না। ঘুষ আওয়ামী স্বৈরাচারের তৈরি করা একটা প্রসেস।’
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ভাষানটেক থানা বিএনপির আহ্বায়ক কাদির মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, ঢাকা মহানগরের সদস্য মাহবুবুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মো. আক্তার হোসেন, আতাউর রহমান, তুহিরুল ইসলাম তুহিন, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, আফাজ উদ্দন, হাজী মো. ইউসুফ, শাহ আলম, মাহাবুবুল আলম মন্টু, মহানগর উত্তরের সিনিয়র সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আলী আকবর আলী, শফিকুল ইসলাম শাহীন, রেজাউর রহমান ফাহিম, আবুল হোসেন আব্দুল, আশরাফুজ্জাহান জাহান, শামীম পারভেজ, মাহাবুব আলম ভূঁইয়া শাহিন, ফারুক হোসাইন ভূইয়া, নুরুল হুদা ভূঁইয়া নূরু, নাসির উদ্দিন, মোতালেব হোসেন রতন, রফিকুল ইসলাম খান, এম এস আহমাদ আলী, ইব্রাহিম খলিল, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, তাসলিমা রিতা।
আরও উপস্থিত ছিলেন জাসাস ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মহসীন সিদ্দিকী রনি, কৃষক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান মিঠু, উত্তর মহিলা দল সদস্য সচিব অ্যাড. রুনা লায়লা, তাঁতীদল উত্তরের আহ্বায়ক শামসুন্নাহার বেগম, জাসাস ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনু, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হাসান রাজ, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন সোহেল।
এছাড়া, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক সিএম আনোয়ার হোসেন, কাফরুল থানা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকরামুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির দেওয়ান জনি, কাফরুল থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান রাব্বি, সদস্য ওয়াহিদ আলম, দক্ষিণখান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান মো. নাজিম উদ্দীন, ক্যান্টনমেন্ট থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শফিকুর রহমান রতন, বিমানবন্দর থানা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন তারেক, যুগ্ম আহ্বায়ক মন্জুর হোসেন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আহমেদ খান, বিমানবন্দর সাংগঠনিক ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুর রউফ, সাধারণ সম্পাদক রানা হোসেন রুবেল, উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল হক, এসআই টুটুল, নজরুল ইসলাম খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এফ ইসলাম চন্দন, তুরাগ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ খোকা, হাজী জহিরুল ইসলাম, মো. চান মিয়া, পল্লবী থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মোকছেদুর রহমান আবির, ভাষানটেক থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম রেজা, মোহাম্মদপুর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান গনী সেন্টু, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন ।
নেতাকর্মীদের নিয়ে বিকেল ৩ টায় পবিত্র কুরআন তেলওয়াতের পরে দলীয় গান গেয়ে কর্মশালা শুরু হয়ে নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে। রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা নিয়ে নেতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আমিনুল হক।
বিডি প্রতিদিন/কেএ