সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জ জেলা আদালতে সিলেট হবিগঞ্জ পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আলহাজ জি কে গউছের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। সোমবার হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হকের আদালতে জামিনের প্রার্থনা করেন তার আইনজীবীরা। এসময় মেয়র জি কে গউছ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
জি কে গউছের পক্ষে জামিন শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আরিফ চৌধুরী, জেলা বার সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর উদ্দিন আহমদ শাহীন, অ্যাডভোকেট খালেকুজ্জামান অ্যাডভোকেট সালেহ আহমেদ, অ্যাডভোকেট সামছু মিয়া, অ্যাডভোকেট এম এ মজিদসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী। অপরদিকে, জামিনের বিরোধিতা করেন পিপি আকবর হোসেন জিতু, অ্যাডভোকেট আলমগীর ভূইয়া বাবুল, অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, অ্যাডভোকেট সালেগ আহমেদ, অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী।
৪০ মিনিট শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ মাহবুবুল হক আদেশে বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার মতো ব্যক্তিত্বকে হত্যার ঘটনায় মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং আসামী অতিস¤প্রতি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাছাড়া এই মামলাটি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। সেজন্য তার জামিন নামঞ্জুর করা হলো। আগামী ২৫ জানুয়ারি মামলার নির্ধারিত তারিখ রয়েছে।
মেয়র জি কে গউছের আইনজীবীরা জানান, তারা উচ্চ আদালতে জামিনের চেষ্টা করবেন।
গত ২৮ ডিসেম্বর শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিন বিচারক রোকেয়া আক্তার তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। এদিকে, গত ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে জি কে গউছকে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সম্পূরক চার্জশিটে জি কে গউছকে সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ১৬৪ এ জবানবন্দিতে ২০০৩ সালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের বাসায় এক আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার যে মিটিং হয়েছিল সেখানে জি কে গউছ উপস্থিত ছিলেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভা শেষে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী ছিদ্দিক আলী, আবদুর রহিম ও আবুল হোসেন। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান এমপি বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২১ ডিসেম্বর ৩য় দফা সংশোধিত সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন নেছা পারুল। চার্জশিটে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌর মেয়র জি কে গউছসহ ৩৫ জনকে আসামী করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা