রাজশাহীতে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে আম্বিয়া বেগম (৪০) নামে ওই বাসের এক যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। এছাড়া বাস থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও আট যাত্রী।
সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ভদ্রার রেশম ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ আম্বিয়া চাঁপাইনবাগহঞ্জ জেলার মহারাজপুর গ্রামের ইসরাইল হোসেনের স্ত্রী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশির পরিবহনের একটি বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে পুলিশি নিরাপত্তায় ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলো। বাসটি রাজশাহী স্টপেজে পৌঁছালে সেখানে নিরাপত্তায় পুলিশ ছিল না। পরে পুলিশি নিরাপত্তা ছাড়াই বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যেই ভদ্রা রেশম ভবনের সামনে আসলে ২-৩ জন যুবক বাসটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এতে বাসটির সামনের বিভিন্ন অংশের কাঁচ ভাঙতে শুরু করলে চালক গতি থামিয়ে দেন। তখনই দুর্বৃত্তরা বাসটি লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোঁড়ে।
এসময় ওই বাসের বাম পাশের সিটে বসা আম্বিয়া পেট্রোল বোমাটি হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেন। এতে তার দুই হাত পুড়ে যায়, ঝলসে যায় মুখমন্ডলও। দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই নারীকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, পেট্রোলের আগুনে আম্বিয়ার শরীরের ৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত।
ওই রাতের হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে আম্বিয়ার স্বামী ইসরাফিল জানান, শিশির পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি নগরীর রেশম ভবনের সামনে পৌঁছালে ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে মারে। ওই সময় বাসের বি-১ ও বি-২ আসনে তারা স্বামী-স্ত্রী বসে ছিলেন। জানালার পাশে বসে থাকার কারণে আম্বিয়ার শরীরে এসে পড়ে পেট্রোলবোমাটি। আগুনে আম্বিয়ার মুখ, গলার বাঁ পাশ ও দুই হাত দগ্ধ হয়। ওই সময় আতঙ্কে বাস থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে আহত হন আরও দুজন। তারা হলেন ঝালকাঠির বারইকুড়াল এলাকার আবু সুফিয়ান (৫০) ও তার ছেলে মাইনুল ইসলাম (২০)। তাদের রামেক হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর হোসেন খন্দকার জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটক করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে।