বরিশালের সীমান্তঘেঁষা ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার খয়েরাবাদ সেতুর ঢালে যাত্রীবাহী নৈশবাসে পেট্রলবোমা হামলায় ৩ যাত্রী মারাত্মক দ্বগ্ধ এবং আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত পৌঁনে ১টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনায় বাসটি পুরোপুরি ভস্মিভূত হয়। বাসে থাকা ৪৭ জন যাত্রীর মালামালও পুড়ে গেছে।
বাসটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে যাত্রী নিয়ে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। গতকাল রাত সাড়ে ১২টায় বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যাত্রা বিরতির পর বাসটি ফের কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
বাসের সামনের দিকের যাত্রীরা বলেছেন, বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর বাসটি মহাসড়কের ওই স্থান (খয়েরাবাদ) অতিক্রমকালে সড়কের পাশে থাকা ৩ ব্যক্তি পরপর ৩টি পেট্রল বোমা ছুড়ে মারে। চালকের দক্ষতায় প্রথম দুটি বোমা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও তৃতীয় বোমাটি বাসের বামপাশে মাঝামাঝি স্থানে আঘাত হেনে জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ভেতরে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠলে চালক বাসটি মাঝ রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ফেলেন। এ সময় যাত্রীরা জানালার গ্লাস ভেঙ্গে কেউ দরজা ঠেলে বাইরে বেড়িয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। তবে বোমার আগুনে এক নারী যাত্রী গুরুতর দ্বগ্ধ হন। তাড়াহুড়ায় জানালা দিয়ে নামতে গিয়ে আরও ৫ যাত্রী আহত হয়। তাদের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আগুনে বাস পুড়ে যাওয়ায় সহায়-সম্বল সব হারিয়েছেন অনেক যাত্রী। গভীর রাতে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বিশেষ করে দরিদ্র যাত্রীরা পড়েন চরম বেকায়দায়।
দুর্ঘটনায় বাসটি পুরোপুরি পুড়ে গেলেও যাত্রীদের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন নলছিটি থানার ওসি আবুল খায়ের। সমস্যায় পড়া যাত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যে পৌছানোর কথা বলেন তিনি। বাসে পেট্রল বোমা হামলাকারীদের আটকের জন্য গতরাত থেকেই বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করার কথা বলেন ওসি।
এদিকে, আগুনে বাস পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল প্রায় ২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে পুলিশের একটি রেকার বাসটিকে সরিয়ে নিলে রাত ৩টার দিকে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়ক যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ২১ জানুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা