প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান ল্যান্ড করতে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতে সাতটার সৌদি আরব সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের বিজি (০৩৬) ফ্লাইটে ঢাকার আকাশে পৌঁছেন। সেদিন শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় ৩১ মিনিট আকাশে চক্কর দিতে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটিকে। ঢাকা শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় আকাশে চক্কর দেয়ার ঘটনায় সংশিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সংসদে সুস্পষ্ট ব্যাখা দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে রুস্তম আলী ফরাজী দাবি জানান। এসময় অধিবেশন কক্ষে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। তবে বেসামারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন উপস্থিত ছিলেন না।
রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিকিউরিটি ফোর্স থাকে। তাদের এটা আগে দেখা উচিত ছিল। সিকিউরিটি ফোর্স থাকে তারা কি করে? বিমান কতৃপক্ষ কি করেছে? বিমানমন্ত্রী এখানে আছেন কি না, আমি জানি না।তাঁকে এব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে। এই ধরনের ঘটনা ঘটার পর কি ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল?এটা তাঁকে বলতে হবে। আল্লাহ না করুক সেখানে তো একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওমরাহ করে এসেছেন। তাঁর উপর আল্লাহর রহমত আছে বলেই হয়ত কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে নাই।
‘সেজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছি আমরা সবাই। কিন্তু স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) বুঝতে পারলেন কিন্তু কন্টোল টাওয়ার কি করছে? বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
শুনেছি, নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণের আগে এসএসএফ বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। রানওয়ে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে এসএসএফ সদস্যরা দেখতে পান সেখানে বেশ কিছু মেটালিক বক্স পড়ে আছে। এসব বক্স দেখে তারা আঁতকে ওঠেন। পরে এসএসএফ সদস্যদের তত্ত্বাবধানে এসব মেটালিক বক্স সরিয়ে নেয়ার পর ফ্লাইটটিকে অবতরণের সংকেত বার্তা পাঠান ককপিটে। তারপর রাত আটটার দিকে সেটা নিরাপদে অবতরণ করে বিমানটি। এমন খবরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হওয়া মন্ত্রী ও ভিআইপিরাও এ খবর জেনে আঁতকে ওঠেন। তিনি আরও বলেন, আজকে এটা কার জন্য ঘটেছে? অন্য বিমানে যারা চড়বে তাদের জন্য কি হবে? সেখানে তো কোন ধরনের নিরাপত্তা থাকবে না। আমাদের দেশে এই ধরনের অবস্থা কেন? বিদেশের কোন দেশে এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে ২৪ঘন্টার ভিতর তা তদন্ত হয়ে রিপোর্ট হয়ে অ্যাকশন হত।কিন্তু আমাদের দেশে আজকে তিন দিন হয়ে গেল তার ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। আমরা জানতে চাই। এধরনের ঘটনা কেন ঘটেছে। কারা সেখানে মেটাল রেখেছিল কি ধরনের বক্স রেখেছিল এবং তার জন্য কারা দায়ী। দায়ীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না, সে বিষয়ে আমরা মাননীয় সংশিষ্ট মন্ত্রীর কাছে জানতে চাই।
এরপর অধিবেশনের সভাপতি ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ফরাজীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ধন্যবাদ, মাননীয় সদস্য আপনি ঠিকই বিষয়টি অবতারণা করেছেন। তবে আপনি এও দেখেছেন এই বিষয়টি নিয়ে দুইটি তদন্ত কমিটি হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি একজন ব্যক্তিকে ক্লোজড করেছে। সুতরাং অ্যাকশন হয়নি একথা আপনি বলতে পারেন না। আপনাকে ধন্যবাদ।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ জুন, ২০১৬/ আফরোজ