মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সহযোগী ও হিন্দুদের চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার ডালিম হোটেলে ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। আদালতের বিচারে এই ডালিম হোটেলকে 'মৃত্যুপুরী' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আসামিপক্ষের দাখিল করা 'প্রামাণ্য দলিল: মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম' বইয়ের তথ্য উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, 'আলবদর সদস্য ও পাকিস্তানি সেনারা আমৃত্যু নির্যাতন করার উদ্দেশ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে ডালিম হোটেলে নিয়ে আসত।'
'এটাও প্রমাণিত যে, ডালিম হোটেলে আলবদরের সদস্যদের পরিচালনা এবং নির্দেশনা দিতেন মীর কাসেম আলী নিজেই। তাই ডালিম হোটেল সত্যিকার অর্থেই 'ডেথ-ফ্যাক্টরি' ছিল।'
সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষকে ধরে এনে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হতো এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করা হত বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেমের বিরুদ্ধে মামলায় নির্যাতিত অনেকের সাক্ষ্যে উঠেছে।
ডালিম হোটেলে নিয়ে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ মোট আটজনকে হত্যার ঘটনায় ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডের রায় এসেছিল।
রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে তাকে ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস দিলেও জসিম হত্যার ঘটনার ১১ নম্বর অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৬ সালের ৮ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া ওই রায় কাসেম পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও ৩০ অগাস্ট তা খারিজ হয়ে যায়। সব বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত সারে দশটায় এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/তাফসীর