জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বড় এবং চার গুণ ভারী একটি নতুন গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। ‘TOI-1846 b’ নামের এই গ্রহটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ধারণা করা হচ্ছে, এটি পানিতে পরিপূর্ণ একটি সুপার-আর্থ (পৃথিবীর চেয়ে আকারে বড় ও শক্তিশালী পাথুরে গ্রহ)।
মরক্কোর উকাইমেদেন মানমন্দিরের বিজ্ঞানী আবদেরাহমান সোবকিয়োর নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল এই গ্রহটি খুঁজে পায়। তারা নাসার TESS (Transiting Exoplanet Survey Satellite) এর সহায়তায় গ্রহটির উপস্থিতি শনাক্ত করেন।
গ্রহটি প্রতি ৩.৯৩ দিনে এর মূল নক্ষত্রকে একবার করে ঘিরে ঘুরে আসে এবং এর পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা প্রায় ৫৬৮ কেলভিন (প্রায় ২৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বলে জানা গেছে।
এই গ্রহের ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ১.৭৯ গুণ এবং ওজন পৃথিবীর চেয়ে ৪.৪ গুণ বেশি। এর গঠন ও উপাদান সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হতে বিজ্ঞানীরা রেডিয়াল ভেলোসিটি (Radial Velocity) পদ্ধতিতে পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করছেন। এতে করে গ্রহটির প্রকৃত গঠন, যেমন—পাথুরে, বরফপূর্ণ বা পানিসমৃদ্ধ কি, না—তা জানা যাবে।
এই গ্রহটির মূল নক্ষত্র TOI-1846 সূর্যের তুলনায় ছোট। এর আকার সূর্যের মাত্র ৪০ শতাংশ এবং ওজন প্রায় ৪২ শতাংশ। তবে এটির বয়স অনেক বেশি—প্রায় ৭.২ বিলিয়ন বছর বা ৭২০ কোটি বছর।
এর আগে, ২০২৫ সালের শুরুতে বিজ্ঞানীরা আরেকটি ‘সুপার-আর্থ’ HD 20794 d নামের গ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। এটি পৃথিবীর ছয় গুণ ভারী এবং আমাদের সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত। এই গ্রহটি একটি সৌরসদৃশ তারার কাছাকাছি ঘোরে এবং এতে পানির উপস্থিতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর কক্ষপথ গোল নয়, কিছুটা উপবৃত্তাকার, ফলে জীবন টিকিয়ে রাখার সম্ভাবনা অনিশ্চিত।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন আবিষ্কার আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানার নতুন দরজা খুলে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও বিশদ ধারণা দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল