কুরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর দুই সিটিতে ২৪টি গবাদিপশুর হাট বসছে। হাটগুলোর মধ্যে গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটও রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে অস্থায়ী হাট। পশুর হাটগুলোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরইমধ্যে গরুসহ অন্যান্য পশু নিয়ে ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। দুই মাস আগে গুলশান ও শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের পাশে জঙ্গি হামলার পর এই ঈদে পশুর হাটগুলোতে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা।
পুলিশের ‘ওয়াচ টাওয়ার’ থেকে পুরো হাটে নজর রাখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরাও বসানো হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সরেজমিন রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, জোরেশোরে ইজারাদারেরা হাটের অবকাঠামো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছেন। আবার কোনো জায়গায় অস্থায়ী হাটের অবকাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। পশু বাঁধার জন্য সামান্য ব্যবধানে বাঁশের খুঁটি মাটিতে পোঁতা হচ্ছে। পশু ব্যবসায়ীদের বিশ্রামের জন্য আলাদা জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি হাটের সামনে নির্মাণ করা হয়েছে সুদৃশ্য ও সুবিশাল তোরণ। আজ রাতেই হাটে পশু ওঠা শুরু হবে। বিক্রি শুরু হবে কাল থেকে। এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) হাট বসবে ১০টি। এর মধ্যে ৯টি অস্থায়ী আর গাবতলী হাটটি স্থায়ী। প্রথমে আটটি অস্থায়ী হাট বসানোর সিদ্ধান্ত থাকলেও পরে মহাখালীর কড়াইল এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) মাঠে নতুন আরেকটি হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে ডিএনসিসি। এর আগে রায়েরবাজার কবরস্থান-সংলগ্ন পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইনের জন্য নির্ধারিত খালি জমিতে হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়। তবে পরে হাটটি বাতিল করে ডিএনসিসি। সূত্র জানিয়েছে, এ হাটটিও বসার সম্ভাবনা আছে। এটি বসলে ঢাকা উত্তরে হাট হবে ১১টি। সে ক্ষেত্রে এবার মোট হাট হবে ২৫টি।
ডিএনসিসির অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে— কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফুট প্রশস্ত সড়কের পাশের বাংলাদেশ পুলিশের হাউজিংয়ের জমি ও আশপাশের খালি জায়গা; উত্তরা আবাসিক এলাকার ১৫ ও ১৬ নম্বর সেক্টরের মধ্যবর্তী সেতু-সংলগ্ন খালি জায়গা; খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা; মহাখালীর কড়াইল এলাকার বিটিসিএল মাঠ; মিরপুর সেকশন-৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা; ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের খালি জায়গা; বাড্ডার আফতাবনগর পশুর হাট; আশিয়ান সিটি হাউজিং এলাকার পশুর হাট এবং ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) হাট বসছে ১৪টি। প্রথমে ডিএসসিসির তালিকাভুক্ত হাটের সংখ্যা ১২টি থাকলেও পরে তালিকায় আরও দুটি নতুন হাট যুক্ত করা হয়।
এদিকে, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কুরবানির হাটগুলোয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় কন্ট্রোলরুম ছাড়াও প্রতিটি হাটে একটি করে কন্ট্রোলরুম থাকবে। সেখানে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরাও থাকবে। প্রতিটি হাটের ওয়াচ টাওয়ার থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হবে।
কেউ মোটা অংকের টাকা বহন করার সময় পুলিশকে জানালে পুলিশ সহায়তা করবে। ‘অজ্ঞান পার্টির’ বিষয়ে বিশেষ টিম কাজ করবে।
এছাড়া জাল টাকা শনাক্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় হাটগুলোয় যন্ত্র থাকবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে হাটের আশপাশের ব্যাংকগুলোয় সান্ধ্যকালীন ব্যাংকিং সেবা চালু রাখার অনুরোধ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ