দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ নয়জন। বজ্রপাতের ঘটনাগুলো ঘটেছে সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও দিনাজপুরে। প্রতিনিধিরা পৃথকভাবে এসব খবর পাঠিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় পৃথক তিন বজ্রপাতের ঘটনায় শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয় আরও ৭ জন। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় দিরাই উপজেলার মাটিয়ারপুর গ্রামের পাশের হাওরে মাছ ধরার নৌকায় থাকা জেলেদের ওপর বাজ পড়ে ঘটনস্থালে দুইজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন: দিরাই উপজেলার মাটিয়ার গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে শামীম আহমদ(২০) ও আব্দুল হাসিমের ছেলে তহুর আলম(৩৫)। এই ঘটনায় আহত হন আর ৬ জন।
একই সময়ে উপজেলার টুক দিরাই গ্রামে বাড়ির পাশে খেলার করার সময় বজ্রপাতে শামরান হোসেন(১১) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, সকাল ১০ টার দিকে শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামের বেড়ামনা হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে আরও তিন জেলের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন: শ্রীহাইল গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে হৃদয় মিয়া(১৮), আক্কল আলীর ছেলে ইমন মিয়া(২০) ও হায়দর আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম(২২)। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল ও শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলার রহমান খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মধুপুরে বজ্রপাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বাবা নিখিল হাজং (৪৫) ও দুই শিশু ছেলে জর্জ সিমসাং (১০) ও লোটন সিমসাং (৮) এর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন মা জনতা সিমসাং (৪০)।
মঙ্গলবার ভোর রাতে মধুপুর বনের মাগন্তিনগর পচারচনা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মি. ইউজিন নকরেক জানান, ভোর রাতে বৃষ্টির সময় গারো পরিবারের নিখিল হাজংয়ের শোবার ঘরের উপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘুমিয়ে থাকা নিখিল হাজংসহ তার দুই শিশু সন্তান জর্জ সিমসাং ও লোটন সিমসাং মারা যায়। এসময় ওই দুই শিশুর মা জনতা সিমসাংয়ের শরীর ঝলসে যায়।
কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে মা ও ছেলে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন মেয়ে।
করিমগঞ্জ থানার ওসি জাকির রাব্বানী বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গুজাদিয়া ইউনিয়নের করমসী গ্রামের কৃষক মারুফ মিয়ার বাড়িতে বজ্রপাত হয়।
নিহতরা হলেন- মারুফ মিয়ার স্ত্রী ললিতা (৪০) ও তাদের ছেলে রিমন (১৫)। বজ্রপাতে তাদের মেয়ে বিউটি (২০) গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
দিনাজপুর : প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতে দিনাজপুরের খানসামায় মতি চন্দ্র রায় (৩৪) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় খানসামার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মতি চন্দ্র রায় খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগর গ্রামের পণ্ডিত পাড়ার মৃত মেঘনাদ চন্দ রায়ের ছেলে।
খানসামার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা আহম্মেদ শাহ্ জানান, মঙ্গলবার সকালে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় বজ্রপাতের কবলে পড়ে তিনি মারা যান। এছাড়া খানসামায় আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে
বিডি প্রতিদিন/ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম