করোনার কারণে দেশের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারাদেশে লকডাউন অবস্থায় জরুরি কার্যক্রমের অধিকাংশই হার্ডওয়্যার পণ্য বা কম্পিউটার দিয়ে অনলাইনে চলছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির সব সেবা এককভাবে অনলাইনে দেওয়ার সুযোগ নেই।
জরুরি সেবায় এ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক্সপার্টকে হার্ডওয়্যার সরবরাহের পাশাপাশি ইন্সটলেশন এবং নিজে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হয়। তাই এই খাতকে জরুরি সেবা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের জরুরি চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের এই দিকটিতে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর জানান, আমাদের উদ্যোক্তাদের সাহস দিতে এই খাতে প্রণোদনার কোন বিকল্প নেই। সুতরাং তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনসহ প্রযুক্তি খাতে কর্মরতদের আগামী ৬ মাসের আংশিক বেতন ও অফিস ভাড়া পরিশোধপূর্বক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য কেবলমাত্র বেতন বাবদ ১৫৬০ কোটি ও অফিস/শো-রুম/ওয়্যারহাউজ ভাড়া বাবদ ৩৭০ কোটিসহ মোট ১৯৩০ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হোক।
এছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে অনুদানের পাশাপাশি সহজ শর্তে ৫ বছর মেয়াদী ২ শতাংশ সুদে জামানতবিহীন ঋণ দেওয়া প্রয়োজন। যে ঋণ গ্রহণের এক বছর পর থেকে শোধের সময় শুরু হবে।
ইতিমধ্যে করোনার নেতিবাচক প্রভাব এই সেক্টরে দৃশ্যমান। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের সম্ভাব্য বিল এবং ওয়ার্ক অর্ডার পাচ্ছে না। রপ্তানির সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলো বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা বিরাজ করায় তাদের কাজের পরিমাণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০-৮০ শতাংশ কমে গেছে। স্থানীয় বাজারেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করায় এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক জনবলের বেতন, অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন বিনিয়োগ করে যে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি করেছে তা এই খাতের উন্নয়নের জন্য একটি অতি আবশ্যকীয় উপাদান। ধারণা করা হচ্ছে, এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে দক্ষ জনশক্তি হারানোর আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে। সরকারের আন্তরিক ভূমিকা ব্যতীত প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনগুলোর একক প্রচেষ্ঠায় এই ক্রান্তিকালে টিকে থাকা চ্যালেঞ্জের বিষয়।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন