ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দেশের বৃহত্তম করোনা আইসোলেশন সেন্টারের নির্মাণ কাজ আজ দশম দিনের মতো চলছে। হাসপাতালটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলীরা বলছেন, লকডাউনের মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। নির্ধারিত সময়েই হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছে। আর ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
আজ মঙ্গলবার আইসিসিবি’র ট্রেড সেন্টারে নির্মাণাধীন হাসপাতাল প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে চলছে ফ্লোরম্যাট বসানোর কাজ। চলছে বিদ্যুতের ওয়্যারিং। অধিকাংশ টয়লেট নির্মাণ হয়ে গেছে। পুরো ট্রেড সেন্টারে বসানো হয়ে গেছে এসি। বিভিন্ন জায়গায় জড়ো করে রাখা হয়েছে ফার্নিচার, চিকিৎসক-নার্সদের জন্য তৈরি বহনযোগ্য কক্ষ, রোগীর বেড বসানোর ক্লাস্টারগুলোকে আলাদা করার জন্য তৈরি বিভাজক।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হামিদ বলেন, দেশের মানুষ যাতে সঠিক সময়ে সেবা পায় সেজন্য আমরা কাজ করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাসপাতালটির নির্মাণ শেষ করতে আমাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা ব্যবহার করছি। তারপরও দু-এক দিন সময় বেশি লাগতে পারে। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরেও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছুটি ভোগ করছেন না। সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের বেড চলে এসেছে, টয়লেটের কাজ শেষের দিকে। ম্যাট বিছানোর কাজ চলছে। সব ধরনের কাজ একসঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছি যাতে আমরা লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। সাধারণ ছুটির কারণে জিনিসপত্র সংগ্রহ করাটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আমার গাড়িতে সরকারি স্টিকার থাকার পরও এখানে আসতে আমাকে বেগ পেতে হয়েছে। কয়েক জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যেই আমরা প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দ্রুত হাসপাতালটি তৈরি করতে। এখন পর্যন্ত নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক।
তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে ২ হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত