২২ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:২২

সরকার এখন ‘কাবিন করে সংসার’ করবে, ইসির আইন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর

‘দ্বিগুণ বড় করতে হবে কারাগার’

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার এখন ‘কাবিন করে সংসার’ করবে, ইসির আইন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ফাইল ছবি

প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘এর আগে বিনা কাবিনে সংসার করেছেন, এখন কাবিন করে সংসার করবেন। যতদিন বিনা কাবিনে সংসার করলেন, সেই অপকর্মের বিচার হবে না?’

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া নাগরিক ফেরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।

মন্ত্রী-এমপি ও নেতাকর্মীসহ সরকারের নানা দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, ‘একদিন হয়ত বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের কারাগারে যাওয়ার পর্বটা শেষ হবে। তবে, কারাগার ফাঁকা থাকবে না। নানা দুর্নীতি, সন্ত্রাসসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ক্ষমতাসীনদের কারাগারে যেতে হবে। দ্বিগুণ বড় করতে হবে কারাগার।’
 
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের জাতীয় সংসদে যারা আছেন, তাদের দেশের মানুষ ভোট চোর বলে। চোর তো চোরই। চোর কখনো সাহসী হয় না। চোরদের যারা সাহসীভাবে তারা কাপুরুষ। আশা করি, আমরা কাপুরুষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হব না। জিয়াউর রহমান সম্মুখভাগে যুদ্ধ করে যেমন দেশ স্বাধীন করেছেন, তেমনি রক্ত যাক সকল বাধা মোকাবিলা করে জনগণের অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই। আমরা যদি সরকারের নির্যাতনের কথা না ভেবে ঘুরে দাঁড়াই এই চোররা পালাবে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, ‘অনেকদিন ধরে উপলব্ধি করেছি, ঘরে বসে আলোচনা করে সমস্যার ফয়সালা হবে না। পরিবেশ পরিস্থিতিতে রাজপথের পাশাপাশি ঘরকে অবহেলা করারও সুযোগ কম।’

‘ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব, করোনার বিধিনিষেধ দিয়ে আরও ঠাণ্ডা করেছে সরকার’ 

করোনাকে সরকার রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর অর্থ এই নয় যে সরকারের বিধিনিষেধ দীর্ঘকাল মানতে আমরা বাধ্য। সময়ই আমাদের বলে দেবে কখন কী করতে হবে।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে কর্মসূচি হয়েছে। বিএনপির শক্তি সরকার পরিমাপ করতে পেরেছে। এ কারণেই সরকার করোনা নামক বিধি-নিষেধের অস্ত্রটি ব্যবহার করেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের জরিপেও ৮৮ শতাংশ মানুষ বলছে, রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘এখন শীতকাল, ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব। করোনার বিধিনিষেধ দিয়ে সরকার আরও ঠাণ্ডা করেছে। সরকার কৌশল করতে পারে। যদি রাজপথ উত্তপ্ত হয় এবং তাদের পতন হয় তাহলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। এই ঠাণ্ডায় ঠাণ্ডায় মাথা কেটেও পড়তে পারে। পরিবেশ কিন্তু তাই বলছে।’

‘এদের বুদ্ধি কম মনে হচ্ছে’

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করে গয়েশ্বর বলেন, ‘বিদেশিরা কাকে অপছন্দ করছে বা করছে না তা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু যাদের নাম তালিকায় ছিল না তারাও ঝাঁকে ঝাঁকে ফেরত আসছেন। অর্থাৎ সরকারের ভেজাল মাল যা বিদেশে চালান করতে চেয়েছিল সব ফেরত আসছে। আবার বিদেশিরা যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার তাদের পুরস্কারও দিচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সরকার যদি তাদের বিচারের আওতায় আনত তাহলে বিশ্ববাসীর রুষ্টতা কিছুটা লাঘব হতে পারত। কিন্তু তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। আসলে এদের বুদ্ধি কম মনে হচ্ছে।’

পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর দেশের মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ কমবে বলে মন্তব্য করেছেন গয়েশ্বর। ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‌‘আপনাদের দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেশেই যদি থাকতে হবে- সরকারে বা বিরোধী দলে যেখানে থাকেন শান্তিতে থাকতে পারবেন, সেই উদ্যোগ গ্রহণ করুন। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিন। এতে করে দেশের মানুষের আপনাদের ওপর যত ক্ষোভ আছে, তারা আপনাদের যতটা ঘৃণা করে, তা কমে যেতে পারে।’

সংগঠনের সভাপতি মিয়া মোহা. আনোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জামানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর