পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার তাহিরা। বয়স সাত ছুঁই ছুঁই। জন্ম থেকেই অচল পা দুটি। হাঁটতে পারে না তাহিরা।
নবজাতক থেকেই তাহিরার সঙ্গী মা-বাবার কোল। মা-বাবার কোলেই জীবনযাপন তাহিরার। তাহিরা পড়তে চায়। লেখাপড়ার প্রতি প্রগাঢ় আগ্রহ দেখে মা-বাবা বাড়ি থেকে মাইল দশেক দূরে একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। বর্তমানে তাহিরা প্রথম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী।
প্রতিদিন কখনো বাবা আবার কখনো মায়ের কোলে চড়ে ১০ মাইল পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে যায় তাহিরা। তাহিরার মা-বাবার কষ্ট হলেও মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সব কিছু হাসিমুখে মেনে নেন তাঁরা। একটি হুইলচেয়ার কেনার মতো সামর্থ্য ছিল না তাহিরার পরিবারের। এবার তাহিরার স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সম্প্রতি তাহিরার জন্য শুভসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি হুইলচেয়ার দেওয়া হয় বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোশারফ হোসেন, ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষিকা জান্নাতি আক্তার ও কালের কণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি জে আই লাভলু। এ ছাড়া তাহিরার পড়াশোনার পুরো দায়িত্ব নেয় শুভসংঘ।
এ সময় তাহিরার মা শিউলী বেগম বলেন, ‘মেয়েটারে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। আমার তিনটি সন্তান, তার মধ্যে ও সবার ছোট। ওরে নিয়েই আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আল্লাহ ওরে পথচলার ক্ষমতা দেয় নাই। প্রতিদিন অনেক দূর থেকে কষ্ট করে কোলে নিয়ে আসি একটু লেখাপড়া শেখানোর জন্য। ওর বাবা অন্যের জমিতে মাটি কাটে, সে সারা দিন কাজেই থাকে। বাচ্চাদের সামলাতে হয় আমাকে। বসুন্ধরার চেয়ারটা পেয়ে অনেক ভালোই হয়েছে। এতে একটু হলেও কষ্ট কম হবে। তাদের অনেক ধন্যবাদ। ’
কালের কণ্ঠ শুভসংঘের বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক ইমন চৌধুরী বলেন, ‘অসহায় দরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। আর তা বাস্তবায়নে সারা দেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের হাজার হাজার সদস্য। শুভসংঘের উদ্যোগে প্রতিটি জেলায় গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি, গৃহহীনদের জন্য মাথা গোঁজার ঘর, অসহায় পরিবারকে স্বাবলম্বীসহ বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় পিরোজপুরেও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।’