নিজেকে শেখ হাসিনার কর্মী পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক সন্তান হিসাবে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ নামক বইয়ে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার পর মহামান্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করে জয়ীও হয়েছেন। বিএনপি-জামায়াতের আমলে তার সম্পাদিত পত্রিকায় সরকারি বিজ্ঞাপন পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু কখনোই তিনি বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপস করেননি। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়ে টানা তিনবার এফবিসিসিআইর পরিচালক হয়েও নিজ জন্মস্থান সাতক্ষীরাকে ভুলে যাননি। তাই তো এবার নিজস্ব অর্থায়নে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় করে দিয়েছেন তিনি। স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও এত দিন জেলা আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় কার্যালয় ছিল না। তবে তার হাত ধরেই সেটির অবসান হলো রবিবার।
বলছিলাম, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সহসভাপতি, দৈনিক ভোরের পাতা ও দ্য ডেইলি পিপলস টাইমস সম্পাদক ও প্রকাশক, এফবিসিসিআই পরিচালক ড. কাজী এরতেজা হাসানের কথা।
একসময় ‘মিনি পাকিস্তান’ খ্যাত সাতক্ষীরায় যে গুটিকয়েক পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে যুগের পর যুগ নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝেও বন্ধুর পথ পেরিয়ে আওয়ামী লীগের ঝাণ্ডা হাতে এগিয়ে গেছে, তাদের মধ্যে অন্যতম শহরের সুলতানপুরের ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিবার। বাবা-মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার দুই সহোদর, বড় ভাই কাজী হেদায়েত হোসেন রাজ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতা এবং ছোট ভাই কাজী এহসান কাদিরও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের স্থায়ী কার্যালয় নিজ খরচে নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ইতোমধ্যেই দিয়েছিলেন দলের জেলা শাখার অন্যতম সহ-সভাপতি ড. কাজী এরতেজা হাসান, সিআইপি। তবে এর আগেই তিনি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ-স্বরূপ প্রায় ২ হাজার বর্গফুটের ওপর নিজ খরচে (স্থায়ী কার্যালয় না হওয়া পর্যন্ত) অত্যাধুনিক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত একটি অস্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ করে দিলেন।
সাতক্ষীরা জেলা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার সড়কের ডে-নাইট কলেজ মোড়ে নবপ্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী কার্যালয়টি আজ রবিবার (১২ জুন) দুপুর ১২টায় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে শতাধিক নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা, দোয়া মোনাজাত ও কেক কাটার মাধ্যমে কার্যালয় উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ একে ফজলুল হক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ মো. নজরুল ইসলাম। নবপ্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী কার্যালয়ে সাড়ম্বর এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সুনিপুণ সঞ্চালনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে তোলেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সহসভাপতি শাহানা মহিদ বুলু, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লাইলা পারভীন সেঁজুতি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শামীমা পারভীন রত্না, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সুব্রত কুমার ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আখতার হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফসার আলী বাবলু, ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল কাদের, সদস্য মাহফুজা রুবি, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রশিদ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম খান বাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক এহসান হাবিব অয়ন, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন অনু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোস্তাক আলী, মাহবুর রহিম চঞ্চল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আসিফ শাহাবাজ খান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন, শেখ জুবায়ের আল জামান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির বিরাজ, শেখ এজাজ উদ্দীন তাপস, জি এম সামিউল ইসলাম রাব্বি, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুশফিকুর রহমান মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী নজরুল ইসলাম বাবু, রবিউল ইসলাম, যুবলীগ নেতা এস এম তুহিনুর রহমান তুহিন, জি এম আহসান, কাজী সাইদ হাসান দোলন, মনিরুল ইসলাম ফুলবাবু, শেখ শাহাজান কবীর সাজু, নাসির রহমতুল্লাহ প্রমুখ।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. এরতেজা হাসানের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। এছাড়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন শেষে ড. এরতেজা হাসান সাংবাদিকদের জানান, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের নিজস্ব কার্যালয় নিজ খরচে নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগও অনেকখানি এগিয়েছে। স্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের জন্য জমি চেয়ে নিজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি লিখিত আবেদন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করেছেন। জেলা প্রশাসন থেকে এ ব্যাপারে আন্তরিক সহযোগিতার আশ্বাসও মিলেছে। জমি পাওয়ার পরপরই সেখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। সেই আবেদনে জোর সুপারিশ করেছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এ কে ফজলুল হক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ মো. নজরুল ইসলাম।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন