বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি

ফিলিপাইনের কিছু ব্যক্তি ও লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধার ও অপরাধীদের শনাক্ত করতে ফিলিপাইনের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল ঢাকায় বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের নিয়মিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ তথ্য চাওয়া হয়। জবাবে ফিলিপাইন তার বিচার বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশকে তথ্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিন বছর বিরতির পর গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের ফরেন অফিস কনসালটেশন অনুষ্ঠিত হয়।

পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়াবলি) মাসুদ বিন মোমেন জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরিতে সহযোগিতা ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। রিজার্ভ চুরি ইস্যুতে দুই দেশের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমরা জানি বিচারিক প্রক্রিয়া সবসময় একটু লম্বা হয়। ফিলিপাইনে, বাংলাদেশে ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এ নিয়ে মামলা চলছে। আমরা কয়েকটি বিষয়ে তাদের সাহায্য চেয়েছি। যেমন চুরির সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের পরিচয়। আমরা কিছু আর্থিক তথ্য চেয়েছি। প্রতিউত্তরে কোনো সময়সীমার উল্লেখ না করে ফিলিপাইন তাদের বিচার বিভাগের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশকে তথ্য দেওয়ার ব্যাপারে কথা দিয়েছে। জানা যায়, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (নিউইয়র্ক ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়।

এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ও ফিলিপাইনে যাওয়া ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয় কয়েক মাসের মধ্যেই। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত পাওয়া এখনো অনিশ্চিত। ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসি এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশকে কোনো অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্ব অস্বীকার করে তারা বলেছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলা ও অসাবধানতার’ দায় বাংলাদেশকেই নিতে হবে। চুরি হওয়া অর্থ ফিলিপাইন থেকে অন্য দেশে পাচার হয়ে গেছে বলেও দাবি করেছে দেশটির বেসরকারি এই ব্যাংক।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, টাকা ফেরতের প্রসঙ্গে ফিলিপাইন ব্যাংক আরসিবিসিকে ২০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করার কথা জানিয়েছে। আমরা বলেছি, ওই টাকাটা আমাদের দেওয়া যেতে পারে। এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে। অবশ্য ওদের অন্য রকম যুক্তি আছে। তাদের মতে, বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থের সঙ্গে এর কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই। ফিলিপাইনে এ নিয়ে যে বিচার প্রক্রিয়া চলছে তা শেষ হতে কত সময় লাগতে পারে এ নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার ওপর তো কারও কোনো হাত নেই। এটা তো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এর কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর