‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ : বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে গতকাল সিগারেটসহ সব ধরনের তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স- আত্মা। অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞার পক্ষ থেকে তামাক করবিষয়ক ‘বাজেট প্রস্তাব ২০২১-২২’ তুলে ধরে বলা হয়, প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১১ লাখ প্রাপ্তবয়সী ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবেন, ৩ লাখ ৯০ হাজার বর্তমান ধূমপায়ী এবং ৪ লাখ তরুণের অকালমৃত্যু রোধ হবে এবং সিগারেট থেকে সম্পূরক শুল্ক, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ এবং ভ্যাট বাবদ অতিরিক্ত ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আসবে।
গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, টিভি টুডের এডিটর ইন চিফ মনজুরুল আহসান বুলবুল, প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল কাইয়ুম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, বিআইআইএসএসের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর, বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান। প্রজ্ঞার বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনটির তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক প্রকল্পপ্রধান হাসান শাহরিয়ার।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আত্মার কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের।আলোচকরা বলেন, সিগারেটে বহুস্তরবিশিষ্ট অ্যাডভ্যালুরেম করকাঠামো চালু থাকায় বাংলাদেশে সিগারেট অত্যন্ত সস্তা এবং সহজলভ্য। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে ভোক্তা কম দামি সিগারেট বেছে নিতে পারছে। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস), ২০১৭-এর তথ্যানুযায়ী ২০০৯-এর তুলনায় ২০১৭ সালে সিগারেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ বেড়েছে।
বৈঠকে বলা হয়, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সামগ্রিক অর্থনীতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে অধূমপায়ীর তুলনায় ধূমপায়ীর কভিড-১৯ সংক্রমণে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কার অনেক বেশি। বিজ্ঞপ্তি।