এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও যে কথা বলতে পারেননি, তেমন 'গুরুতর' অভিযোগ শোনা গেল তার দলের সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের মুখে। শুক্রবার বর্ধমানের পানাগড়ে এক নির্বাচনী জনসভায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকেই 'চোর' বলে কটাক্ষ করেছেন মুকুল।
মুকুল মন্তব্য করেন, 'সনিয়া-রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস আসলে একটা চোরের দল। তারা স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল জুড়ে আকণ্ঠ দুর্নীতি করেছে।'
গত মঙ্গলবারই রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদের সুতিতে দলের সভায় সারদা-কেলেঙ্কারি নিয়ে মমতার সরকারকে একহাত নিয়েছিলেন সনিয়া। তার বক্তব্য ছিল, 'রাজ্য সরকারের মদতেই সারদার মতো সংস্থাগুলো ১৮ লাখষ গরিব মানুষের টাকা লুঠ করেছে।'
এরপর থেকেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তৃণমূল সুর চড়িয়েছে। তবে এ দিন সনিয়ার প্রতি মুকুলের আক্রমণ অতীতের সব নজির ছাড়িয়ে গেছে। মুকুল বলেন, 'বেশ কিছু দিন ধরে সনিয়া-রাহুল-বুদ্ধদেবরা বলে বেড়াচ্ছেন, মুকুল রায়সহ তৃণমূল নেতারা সারদার টাকা চুরি করেছেন। কোনও তদন্তে যদি এই অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে তৃণমূলই রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবে।'
সারদা-কাণ্ডের সিবিআই তদন্ত নিয়ে দাবি, পাল্টা দাবিও যথারীতি অব্যাহত। এ দিন হুগলির তারকেশ্বরে এক নির্বাচনী জনসভায় সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে মমতা বলেন, 'নন্দীগ্রাম, নেতাই, ছোট আঙারিয়ার মামলায় সিবিআই কী করছে! আমি রেলমন্ত্রী থাকার সময় জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ড ঘটেছিল। সিবিআই তদন্ত করিয়েছিলাম। সে তদন্ত এখনও শেষ করতে পারল না সিবিআই' (যদিও এ তথ্য ঠিক নয়।
মমতা এবং মুকুলের অভিযোগ, রাজ্যে সারদার মতো সংস্থগুলির রমরমা বাম আমলেই। সেগুলোর অনুমোদনও দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরেও সিপিএম এবং কংগ্রেস আগের মতোই সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড়।
এ দিনই কলকাতা প্রেস ক্লাবে 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চ্যালেঞ্জের ভঙ্গিতে বলেন, 'এ নিয়ে আমাদের গোপন করার কিছু নেই। আজই উনি (মমতা) সিবিআই তদন্তে রাজি হয়ে যান না। স্পষ্ট হয়ে যাক, কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত।'