ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস, ছাত্রলীগের ইতিহাস স্বাধীনতার ইতিহাস-এই নির্মোহ সত্যটি উচ্চারণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসের এই গৌরবময় ছাত্রসংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে, বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষে। ছাত্রলীগের সেই লক্ষ্য অর্জনের ইতিহাস মহান ত্যাগের, রক্ত দানের ও বীরত্বের। কত জাতীয় বীর ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানকে জন্ম দিয়েছে এই ছাত্রলীগ, যা মহাকালের ইতিহাসে লেখা হবে একদিন।

পাকিস্তানি শাসকদের শাসন শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে বিসুভিয়াসের মতোন জ্বলে ওঠেছে। লক্ষ্য অর্জনে নিরন্তর আগুনের মতোন জ্বলেছে। ৫২ থেকে ৫৪ হয়ে ৫৮'র আইয়ুবের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬২'র শিক্ষা, ৬৬'র ৬ দফা ৬৯'র গণঅভ্যুত্থান হয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৭১'র উত্তাল মার্চে জাতিকে এক মোহনায় মিলিত করতে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ থেকে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়েছে। মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তার ইতিহাস রক্তে লেখা আত্মদানের ইতিহাস। মুজিববাহিনীর যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস।

একালের ছাত্রলীগের ব্যর্থ নেতৃত্ব ও একাংশের আদর্শহীন রাজনীতি দিয়ে ইতিহাস ছাত্রলীগের মূল্যায়ন করবেন না। সাম্প্রতিককালের আদর্শহীন দেউলিয়া রাজনীতির অশুভ ছায়া ছাত্ররাজনীতিকে কলুষিত করেছে, যার প্রভাব ছাত্রলীগের উপরও পড়েছে। ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদেরই আত্মসমালোচনা আত্মসংযম ও আত্বশুদ্ধির মাধ্যমে আদর্শিক ঐতিহ্য ও গৌরবের উত্তরাধিকারিত্বের ধারায় ফিরে আসার তাগিদ সময়ের। ছাত্রলীগ অন্যায় অপকর্ম করতে পারে না, অন্যায়ের বিরুদ্বে প্রতিবাদের নাম ছাত্রলীগ। বঙ্গবন্ধুর মহান দেশ প্রেম ও মানব কল্যাণের আদর্শিক রাজনীতির সাহসের নাম ছাত্রলীগ।

আজ ছাত্রলীগের জন্মদিনে আয়নায় নিজেদের দেখে মূল্যায়ন করার দিন। জন্মলগ্ন থেকে যারা সারাদেশে ছাত্রলীগের আদর্শিক রাজনীতির পতাকা বহন করে জীবন দিয়েছেন, ইন্তেকাল করেছেন তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। যারা জীবিত আছেন দেশ বিদেশে তাদের শুভেচ্ছা। যারা বীরত্বের ভূমিকা রেখেছেন তাদের অভিবাদন।

লেখক: বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা