শিরোনাম
১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০৯:৫৪

এইটুকু প্রত্যাশা তো করতেই পারি, পারিনা?

ড. আলী রীয়াজ

এইটুকু প্রত্যাশা তো করতেই পারি, পারিনা?

মিজানুর রহমান খান এবং আলী রীয়াজ

মিজানুর রহমান খানের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে ২০০৫ সালে – পনেরো বছর আগে, ঢাকায় প্রথম আলো’র সূত্রে। এরপরে আমার ঢাকা সফরে প্রতিবার মিজানের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। এর বাইরে টেলিফোনে ই-মেইলে যোগাযোগ তো আছেই। মিজান যখন বাংলাদেশ বিষয়ক দলিলের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের আর্কাইভে কাজ করতে এলেন তখন আমাদের দেখা হবার কথা ছিলো, কিন্ত ফোনে নিয়মিত কথা হলেও শেষ পর্যন্ত দেখা হয়নি। 

মিজানের লেখা পড়ে ভিন্নমত জানাতে, ঐকমত্য প্রকাশ করতে বহুবার কথা হয়েছে। আমার কঠোর সমালোচনা স্বত্বেও মিজান কখনোই আমার ওপরে ক্ষুব্ধ হননি, উপরন্ত হাসিমুখেই এগুলো সহ্য করেছেন। আমি ঢাকায় যে বোনের বাড়িতে থাকি সেখানে মিজান আসেন; বোনকে বলি – ‘মিজান আসবে; চিনতে পেরেছেন?’ মিজানকে আমার বোন চেনেন প্রথম আলোর লেখক আর টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গুরু গম্ভীর বিষয়ের আলোচক হিসেবে; আমার বন্ধু হিসেবেও। আমি বলি, “ঐ যে মিজান, উচ্চস্বরে কথা বলে”। মিজান উচ্চস্বরে কথা বলেন, কিন্ত তাঁর বিনয় এবং অপরের প্রতি, অপরের মতের প্রতি শ্রদ্ধা অপরিসীম। উচ্চস্বরে কথা না বললে মিজানকে মানায় না। তাঁর হাসি সংক্রামক। 

অনেকবার মিজানকে বলেছি, ‘আপনার ওপরে তো আমি রাগ করেছি’। মিজানের ওপরে এরচেয়ে বেশি রাগ করা সম্ভব বলে আমার কখনোই মনে হয়নি। মিজানের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে আছি। গত দিনগুলোতে জাকারিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময়ে আশা করেছি জাকারিয়া বলবে – এখন ভালোর দিকে। সেটা শুনিনা, কিন্ত ভেবেছি – অবস্থার অবনতি হচ্ছেনা সেটাই বা কম কি। এখন আমরা এমন এক সময়ে আছি যে সামান্য আলোর রেখাই মনে হয় অনেক বড়। মিজান শিগগিরই ভালো হবেন, আবার উচ্চস্বরে কথা বলবেন, টেলিফোনে কথা হবে, ঢাকায় দেখা হবে – আমি মিজানকে বলবো – ‘আমি তো আপনার ওপরে রাগ করেছি’, মিজান হেসে উঠে বলবে, ‘কেন রীয়াজ ভাই’। তাঁর হাসি সংক্রমিত হবে আমার মধ্যে। এইটুকু প্রত্যাশা তো করতেই পারি, পারিনা?

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর