শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ফ্রিজের বাজার দাঁড়াতে পারে ৭৫ কোটি ডলারে

এম এ রাজ্জাক খান রাজ, চেয়ারম্যান, মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ ভাইস প্রেসিডেন্ট, এফবিসিসিআই

ফ্রিজের বাজার দাঁড়াতে পারে ৭৫ কোটি ডলারে

অসহনীয় গরমে খাবারকে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফ্রিজ। ফ্রিজ এখন বিলাসিতা নয়, এটি প্রয়োজনীয় পণ্য। দেশে ফ্রিজের বাজার দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। বর্তমানে দেশের ফ্রিজের বাজারের আকার প্রায় ৬০ কোটি ডলার। যা চলতি বছর বেড়ে ৭৫ কোটি ডলারেরও অধিক দাঁড়াতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।

আমরা এখন আর বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল না। কারণ আমাদের দেশেই এখন ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রযুক্তির বাজারে সমতা আনতে ভূমিকা রেখেছে দেশীয় পণ্য। ইতোমধ্যেই রেফ্রিজারেটরের ৯০ শতাংশেরও কাছাকাছি, টেলিভিশনের ৬০ শতাংশেরও অধিক এবং এয়ার কন্ডিশনারের ৪০ শতাংশের বেশি বাজারই বর্তমানে এ দেশীয় কোম্পানির দখলে। মিনিস্টার এ খাতে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে গেছে। ফলে দেশের বাজারে এসব পণ্যের দাম কমেছে, একই সঙ্গে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

আমাদের দেশে ইলেকট্রনিক্স শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে টেকনিক্যাল লোকবলের প্রয়োজন
বিশ্বমানের প্রযুক্তি দিয়েই সম্পূর্ণ দেশেই তৈরি হয় ফ্রিজ। বিভিন্ন দামে বিভিন্ন ধরনের ফ্রিজ তৈরি করে থাকে মিনিস্টার। মিনিস্টারের রয়েছে স্পেসিফিকেশন, আকৃতি, ডিজাইন। প্রতিটি পণ্যের বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করেই দামের ভিন্নতা রয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি ফ্রিজে যুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। যা সঠিক তাপমাত্রায় হিমায়িত খাবারের ভিটামিন এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করার জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখে। সম্পূর্ণ অটোমেটিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিটি ফ্রিজ। একই সঙ্গে ৬৬% অ্যানার্জি সেভিং-অ্যানার্জি সেভিং কম্প্রেসর ব্যবহার করে, ফোমিংয়ের ঘনত্ব ৩৬ কেজি প্রতি মিটার কিউ (জার্মানি কেমিক্যাল) নিয়ে আসা হয়েছে। যার ফলে প্রতিটি ফ্রিজ হয় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এ ছাড়াও ন্যানো টেকনোলজি ও সিক্স-এ কুলিং সিস্টেম থাকায় খাবার দ্রুত ঠাণ্ডা হয়। ফ্রিজ সহজে পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ডোর গ্যাসকেট; যেন ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসমুক্ত থাকে। একই সঙ্গে মিনিস্টার ফ্রিজ কম্প্রেসরে দিচ্ছে ১২ বছরের গ্যারান্টি।

মিনিস্টার সব সময় পণ্যের গুণগত মানের ওপর কোনো ধরনের ছাড় দেয় না। গ্রাহকের চাহিদা ও সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ প্রতিবছর যে আমদানি করে তার প্রায় ৩০ শতাংশ চীনের সঙ্গে। বাকিটা অন্যান্য দেশ থেকে। শিল্পের কাঁচামাল, মধ্যবর্তী কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক দ্রব্য, ইলেকট্রিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট, ইলেকট্রনিক্সসহ সব ধরনের তৈরি পণ্যই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। আমদানির কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে অনেক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু ক্রেতার সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহের চুক্তিও বিদ্যমান থাকছে না। তবে আমরা ধারণা করছি, আগামীতে নিজেদের কাঁচামাল দিয়েই রেফ্রিজারেটর উৎপাদন করতে পারব।

বিশ্বে তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতির যে জোয়ার বইছে তাতে শামিল হতে হবে আমাদেরকেও। ফলে এ শিল্পকে আরও চাঙা রাখতে ফ্রিজ, টেলিভিশন, এয়ারকন্ডিশনসহ এসব পণ্য তথা দেশীয় ইলেকট্রনিক্স শিল্প মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দিচ্ছে বর্তমান সরকার।

ইলেকট্রনিক্স শিল্পকে আজকের এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে আমাদের নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে, বিগত সরকারের নানা ধরনের নিয়মনীতি, কম্পিটিউটরদের এগ্রেসিভ মার্কেটিং, পারিপার্শিক পরিবেশ ইত্যাদি। তারপরও বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় আমাদের এই ইলেকট্রনিক্স শিল্প অনেকটাই এগিয়ে গেছে। তাছাড়া আমাদের দেশে ইলেকট্রনিক্স শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে টেকনিক্যাল লোকবলের প্রয়োজন। এ ছাড়া আমাদের পণ্য যেহেতু ইলেকট্রিক্যাল সে ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করায় দেশের প্রতি জায়গায় আমাদের পণ্য ব্যবহার করতে পারছে। এতে আমাদের চ্যালেঞ্জ অনেকটাই কমে গেছে। রেফ্রিজারেটর বাজারের প্রায় ১৫ শতাংশ দখল করে রেখেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় অন্যতম ব্র্যান্ড মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ। আগামীতে এই হার আরও বাড়বে বলে আশা করছি এবং বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে আমরা পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনারও নিয়েছি।

সর্বশেষ খবর