শিরোনাম
৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৮:১৮

নিউইয়র্কের মুসলমানরা আর অযথা হয়রানি হবে না

নিউইয়র্ক থেকে এনআরবি নিউজ:

নিউইয়র্কের মুসলমানরা আর অযথা হয়রানি হবে না

গত ডিসেম্বর মাসে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে মুসলমানদের সাথে মতবিনিময়কালে ধর্মীয় কারণে কেউই টার্গেট হবে না বলে মন্তব্য করেছিলেন সিটি মেয়র বিল ডি বস্নাসিয়ো।

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ ১৫ বছর পর মুসলমানদের ওপর নিউইয়র্ক পুলিশের নজরদারিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানে অবস্থিত ফেডারেল কোর্টে বিচারক চার্লস হেইটের এজলাসে সম্পাদিত এক সমঝোতা অনুযায়ী নিউইয়র্ক পুলিশের নজরদারি প্রক্রিয়ার তদারকির জন্য স্বাধীন একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হবে। নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার সমুন্নত রাখার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান প্রদত্ত বিধি অনুযায়ী এ ধরনের ব্যবস্থা ১৯৮৫ সাল থেকে চালু ছিল। কিন্তু ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাসী হামলার পর তা বাতিল করা হয়।

সিটি প্রশাসন তথা পুলিশ কর্তৃক নিরাপত্তার অজুহাতে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলকভাবে মুসলমানদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ, মসজিদসমূহে সার্বক্ষণিক নজরদারি, মুসল্লীদের গতিবিধি মনিটরিং, স্কুল-কলেজের মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীসহ মুসলমানদের সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের ওপর নজরদারির ঘটনাকে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি হিসেবে ঘোষণার দাবিতে আমেরিকান সিভিল রাইটস ইউনিয়ন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ২০১১ সালে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছিল ফেডারেল কোর্টে।

যেকোন ধরনের তদন্তের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে না-এমন প্রক্রিয়া অবলম্বন করবে নিউইয়র্কের পুলিশ। উপরোক্ত সমঝোতায় সেটিও স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশিদের পরিচালনাধীন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে মুসলমানদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সিটি মেয়র বিল ডি বস্নাসিয়ো অঙ্গিকার করেছিলেন, মুসলমানসহ কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়কেই অযথা হয়রানি করা হবে না বা বিশেষ কোন নজরদারিতে রাখা হবে না। এ সমঝোতার প্রক্রিয়া সে বিষয়টিও প্রভাব ফেলেছে বলে অনেকে মনে করছেন।

ফেডারেল কোর্টে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী কারো বিরুদ্ধে যেকোনো কারণে তদন্ত করতে তার সময়সীমা বেধে দিতে হবে এবং বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে ধর্ম অথবা বর্ণের কারণে কাউকে টার্গেট করা যাবে না। এমন কিছু করা হলে তা হবে বেআইনী। শুধু তাই নয়, ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট 'ধর্মীয় উগ্রপন্থি' শীর্ষক যে প্রতিবেদন তাদের ওয়েবসাইটে রেখেছে, সেটি সরিয়ে ফেলতে হবে।

বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ যখন আরো বেশী সজাগ থাকার বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে, ঠিক সে সময়ে নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসন কর্তৃক এ ধরনের সমঝোতার ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে মার্কিন মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে। যদিও এই সমঝোতার পর নিউইয়র্ক পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এবং মামলা দায়েরকারি নাগরিক অধিকার সংগঠক-সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এই সমঝোতার ফলে সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে অনুসন্ধানকালে কোন নাগরিকেরই ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও জাতিগত অধিকার ক্ষুন্ন হবে না মনে করছেন আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের এটর্নী হিনা সামসী। মামলা দায়েরকারী এটর্নী সামসী আরও উল্লেখ করেন, 'সমঝোতা অনুযায়ী নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে সংস্কারসাধিত হলে ধর্মীয় কারণে কোন মুসলমান অথবা অন্য কোন ধর্মাবলম্বী অহেতুক হয়রানির শিকার হবে না বলেই আমরা বিশ্বাস করছি।

বিডি-প্রতিদিন/০৮ জানুয়ারি, ২০১৫/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর